নয়াদিল্লি: জামিয়া মিলিয়ার পর এবার গুলি চলল দিল্লির শাহিনবাগ এলাকায়, যেখানে এক মাসের ওপর হয়ে গেল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভ চলছে প্রতিবাদীদের। আজ বিকালে আচমকা অবস্থানস্থলে গুলি চালায় এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। শূন্যে গুলি ছোঁড়ে সে। কেউ আহত হয়নি। এ ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
তাকে দিল্লি পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে। কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ধরা পড়ার সময় সে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিচ্ছে। ধৃত যুবককে এও বলতে শোনা গিয়েছে, এই দেশে শুধু হিন্দুরাই সব ঠিক করবে, আর কেউ নয়! তাকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
শাহিনবাগের প্রতিবাদ অবস্থান নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সুর চড়াচ্ছিলেন বিজেপি নেতারা। কেন সেখানে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে বিক্ষোভ চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। কেউ কেউ দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতলেই অবস্থান তুলে দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। দিল্লি ভোটেও ইস্যু হয়েছে শাহিনবাগের সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ।
মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকীর দিন জামিয়া মিলিয়ার পড়ুয়াদের জমায়েতের সামনে হাজির হয়ে শূন্যে পিস্তল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দিতে গুলি চালিয়ে দেয় একজন। দিল্লি পুলিশের দাবি, সে নাবালক। গুলিতে জামিয়ার এক পড়ুয়া হাতে চোট পান। আক্রমণকারী ‘ইয়ে লো আজাদি, দেশ মে রহেনা হোগা, বন্দেমাতরম কেহনা হোগা’ বলেও চিত্কার করতে থাকে। ‘দিল্লি পুলিশ জিন্দাবাদ’ও বলে সে। প্রায় ১২ জন পুলিশকর্মীর সামনেই সে কী করে গুলি চালাল, সেই প্রশ্ন ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত সে দিল্লি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
গত সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে বারবার দেশ কে গদ্দারো কো বলে ধুয়ো তোলেন, উপস্থিত জনতা বলে ওঠে গোলি মারো শালো কো! পরদিন বিজেপি বিধায়ক পরবেশ সাহিব সিংহ ভার্মা হুঁশিয়ারি দেন, শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা আপনাদের ঘরে ঢুকে পড়ে মা-বোনদের ধর্ষণ করতে পারে। এজন্য অনুরাগ, পরবেশের ওপর যথাক্রমে ৭২ ঘন্টাও ৯৬ ঘন্টা ভোটপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নির্বাচন কমিশন।
বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, শাসক দলের বিধায়কের প্ররোচনা দেওয়া মন্তব্যের জন্যই জামিয়া মিলিয়ায় গুলি চলেছে।