নয়ািদিল্লি: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মায়াবতী ও তাঁর দল বিএসপির নির্বাচনী প্রতীক হাতির পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসেছিল। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে বিএসপি নেত্রী বলেছেন, ‘জনগনের ইচ্ছা’ অনুযায়ী ওই মূর্তি বসানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে মায়াবতী অতীতে জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধী ও নরসিমা রাওয়ের মতো নেতাদের মূর্তি কংগ্রেস সারা দেশে বসিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছেন।সাম্প্রতিককালে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি হিসেবে পরিচিত সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি সহ রাজ্য সরকারগুলির মূর্তি বসানোর উদাহরণও আদালতে পেশ করেছেন। সেইসঙ্গে সরকারি খরচে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি শাসিত সরকার ২২১ মিটার উঁচু রামের মূর্তি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিএসপি নেত্রী। এই সব উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, স্মৃতিস্মারক ও মূর্তি বসানো এ দেশে নতুন কিছু নয়।


সর্বোচ্চ আদালতে দায়ের করা হলফনামায় মায়াবতী বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে সরকারি খরচে প্রকাশ্যে স্থানে বিভিন্ন  নেতাদের মূর্তি বসিয়েছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম বা এই মামলার পিটিশনকারীরা এ সব নিয়ে কখনও প্রশ্ন তোলেননি।

এক অ্যাডভোকেটের দায়ের করা মামলায় এই হলফনামা জমা দিয়েছেন বিএসপি নেত্রী। ওই অ্যাডভোকেট তাঁর আর্জিতে বলেন, ২০০৮-০৯ এবং ২০০৯-১০-এ মায়াবতী যখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে তাঁর ও বিএসপির নির্বাচনী প্রতীকের মূর্তি গড়তে সরকারি কোষাগারের ২০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল।

মায়াবতী তাঁর হলফনামায় বলেছেন,  নিজেকে মহিমান্বিত করতে বা দলের প্রতীকের প্রচারের জন্য নয়, সমাজ সংস্কারকদের চিন্তাভাবনা প্রসারের লক্ষ্যে ওই মূর্তিগুলি বসানো হয়েছিল।

বিএসপি নেত্রী বলেছেন, সমাজের অবহেলিতদের উন্নয়নের জন্য তাঁর জীবন উত্সর্গ করেছেন এবং এই লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি অবিবাহিত থাকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

মায়াবতী আরও বলেছেন, রাজ্য বিধানসভায় অনুমোদিত বাজেটে বাজেট বরাদ্দের অর্থেই মূর্তিগুলি বসানো হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট মৌখিক পর্যবেক্ষণে বলেছিল যে,  প্রয়োজনে মূর্তি তৈরিতে খরচ হওয়া ওই টাকা ফেরত দিতে হবে মায়াবতীকে। তবে তার আগে মায়াবতীর কী বক্তব্য, সেটা জানতে চেয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই নির্দেশেই মঙ্গলবার লিখিত বক্তব্য জানালেন আদালতে।

মূর্তি বসানোর সরকারি অর্থের অপব্যবহার হয়েছে বলে যে মামলা দায়ের হয়েছে, তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে মায়াবতী তা খারিজের আর্জিও জানিয়েছেন।

মায়াবতী তাঁর হলফনামায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, শুধু দলিত নেতা-নেত্রীদের মূর্তি বসালেই কেন প্রশ্ন ওঠে? তিনি বলেছেন, এক দলিত মহিলা নেত্রীর প্রতি এ ধরনের সম্মান কেউ কেউ বরদাস্ত করতে পারেন না। এবং তাঁরাই হাইকোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টে এ ধরনের মামলা দায়ের করেন।

হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, মায়াবতীর মূর্তি বসানোর প্রস্তাবের মাধ্যমে রাজ্য বিধানসভায় ‘জনগনের ইচ্ছে’র প্রকাশ ঘটেছে।