শ্রীনগর: মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লা গ্রেফতার। জম্মু ও কাশ্মীরের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদ লোন, ইমরান আনসারিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মেহবুবা, ওমরকে গতকাল রাতে গৃহবন্দি করা হয়। সেখানে ব্যাপক সংখ্যায় বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তখনই বিভিন্ন মহল থেকে অনুমান প্রকাশ করা হয়, বড় কিছু ঘটতে চলেছে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে।
সোমবার সকালেই রাজ্যসভায় জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ও গোটা রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কংগ্রেস সহ বিরোধী শিবিরের কোনও কোনও দলের প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও উচ্চকক্ষে ভোটাভুটিতে তা পাশ হয়। তারপর রাতেই জানা যায়, ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) নেতা-নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও ব্যাপক ধরপাকড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন ওমর, মেহবুবা দুজনেই কেন্দ্রের পদক্ষেপের নিন্দা করেন। ওমর বলেন, ভারত সরকারের আজকের একতরফা ও বিস্ময়কর সিদ্ধান্তে ১৯৪৭ সালে ভারতে অন্তর্ভুক্তির সময় জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ যে ভরসা, আস্থা দেখিয়েছিলেন, তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হল। এই সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রয়াসী, বিপজ্জনক প্রতিক্রিয়া হবে। এটা রাজ্যের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন। গতকাল শ্রীনগরের সর্বদল বৈঠকে এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করা হয়। ওমর আরও বলেন, ভারত সরকার এই মারাত্মক খারাপ সিদ্ধান্তের ভিত তৈরি করতে সাম্প্রতিক কয়েকটি সপ্তাহে প্রতারণা, চুরির রাস্তা নিয়েছে। ভারত সরকার ও জম্মু কাশ্মীরে তার প্রতিনিধিরা আমাদের মিথ্যা বলেছিলেন যে, কোনও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না, আর তারপরই আমাদের সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কাই দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সত্যি হয়ে উঠল। গোটা রাজ্য, বিশেষত কাশ্মীর উপত্যকাকে কারাগারে পরিণত করে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল বলে অভিমত জানান তিনি।


আর মেহবুবা ট্যুইট করেন, ভারত সরকারের একতরফা ৩৭০ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ, অসাংবিধানিক। এটা ভারতকে জম্মু ও কাশ্মীরে দখলদার বাহিনী করে তুলবে বলেও অভিমত জানান তিনি। লেখেন, ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম দিন আজ। ১৯৪৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীর নেতৃত্ব দ্বিজাতি তত্ত্ব বাতিল করে ভারতের সঙ্গে থাকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার প্রতিদান মিলল!