কলকাতা : 'সরি'। তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হতেই তাঁর দিকে তাকিয়ে মুকুল রায় বলে উঠলেন এই কথা। ক্ষমাপ্রার্থনার পরই যেন আগের যাবতীয় বিভেদ নিমেষে সরিয়ে ফেলে সরকারিভাবে দ্রুত গতিতে সম্পূর্ণ হয়ে গেল একদা তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়ের ঘাসফুলে ঘর ওয়াপসি। বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছিলেন গতরাতেই। আজ সকালের পর থেকে ক্রমশ জল্পনার রেশ স্পষ্ট হচ্ছিল। তারপর বিকেলে তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠকে ৩ বছর ৯ মাস পর তৃণমূলে ফের মুকুল রায়।
নিজের কথা বলার সময় হাতে মাইক নিয়ে উঠে দাঁড়াতে যাচ্ছিলেন, তাঁর হাতে ধরে হালকা টানে চেয়ারে বসেই বক্তব্য রাখার বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যার পর মুখে একগাল হাসি নিয়ে মুকুল রায় বললেন, 'এই ঘরে আজকের এই সভায় আমার আজকে নিজের খুব ভালো লাগছে যে পুরনো ছেলেগুলোর সঙ্গে দেখা হচ্ছে, ভালো লাগছে যে বিজেপি থেকে বেরিয়ে এসে এই নতুন আঙিনায় যাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে, আমার ভালো লাগছে, বাংলা আবার তার নিজের জায়গায় ফিরবে, এর নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যিনি তিনি সকলের নেত্রী, ভারতের নেত্রী মমতা।'
কেন 'ঘরে' ফিরলেন পরে তা বিস্তারিত লিখিতভাবে দেবেন বলেও জানালেন মুকুল রায়। যে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে থাকাকালীন তৃণমূল ছেড়েছিলেন, আপাতত সেই দায়িত্বে থাকা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই উত্তরীয় পরিয়ে সরাকরিভাবে স্বাগত জানালেন দলে। যার পরে জড়িয়ে ধরলেন মুকুল রায়কে। আর সাংবাদিক বৈঠকে সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছিল কি না প্রশ্নের উত্তরে ধুলো ঝাড়ার ভঙ্গিতে বললেন, 'আমার সঙ্গে কখনও মনোমালিন্য ছিল না।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুরনো সৈনিকের পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিলেন মনোমালিন্য না থাকার কথা।
২০১৭ সালে মুকুল রায়ের তৃণমূল ছাড়া যেমন ঘাসফুল শিবিরের কাছে বড় ধাক্কা ছিল, তেমন এবার তাঁর ঘর ওয়াপসিতে ধাক্কাটা বিজেপির জন্য। আর যে সময়ে দাঁড়িয়ে মুকুল রায়ের কথা, 'আমি বিজেপি ছেড়ে এসেছি তৃণমূল, এখন বাংলার যা পরিস্থিতি, তাতে বিজেপিতে কেউ থাকবে না।' ঠিক কারা কারা আসতে পারেন, জানতে চাইলে তাঁর সংযোজন, 'দেখা যাক আর কতজন আসবেন, ক’জন আসবে।'