মুম্বই: করোনাভাইরাসজনিত অতিমারি পরিস্থিতিতে যা কিছু নজর কেড়েছে, তার মধ্য রয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের সহৃদয়তা, সহমর্মিতা। কখনও পুণের কোনও অটোরিক্সা চালককে স্যানিটাইজার নিয়ে শহরে চরকিপাক কেটে লোকজনকে সতর্ক করতে দেখা গিয়েছে। আবার কখনও কোভিড-১৯ আক্রান্তরা যাতে বিন্দুমাত্র অসুবিধায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে পুলিশের তত্পরতা নজর কেড়েছে। সংকটের এই সময়ে সহৃদয় ব্যক্তিদের কার্যকলাপ মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়েছে।
এরইমধ্যে মম্বইয়ের মালাড শহরতলির এক বাসিন্দা নিজের গাড়ি বিক্রি করে সেই অর্থে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে কেনা তাঁর ফোর্ড এন্ডেভার গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন ৩১ বছরের শাহনওয়াজ শেখ। গাড়িটি কেনার নয় বছর পর সত্ অভিপ্রায়ে তা বিক্রি করে দিলেন তিনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ গত ৫ জুন থেকে মুম্বইয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের পরিবারগুলিতে সিলিন্ডার বিলি করছেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৫০ পরিবারকে তিনি সাহায্য করেছেন।
আর এসইউভি-টি বিক্রির আগেও তিনি সেটি আশেপাশের লোকজনের জন্য অস্থায়ী অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার করছিলেন শেখ।
আসলে শেখের এই সহৃদয়তার মূলে রয়েছে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। গত ২৮ মে শেখের ব্যবসায়িক শরিকের বোন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা য়ায়। অটোরিক্সায় করে রোগীক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির আগেই তার মৃত্যু হয়। পাঁচটি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছিল শেখের বন্ধুর বোনকে। চিকিত্সকদের সঙ্গে কথা বলে শেখ জানতে পারেন, অক্সিজেন দেওয়া গেলে তাঁর ব্যবসার শরিকের বোনকে হয়ত বাঁচানো যেতে পারত।
যে অক্সিজেনের অভাব ব্যবসার শরিকের বোনকে কেড়ে নিয়েছে, তারপর থেকে অন্যান্য আক্রান্তদের তা থেকে রক্ষা করতেই এসইউভি বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তিনি এ ব্যাপারে গবেষণাও করেন এবং বাজারে অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব সম্পর্কে জানতে পারেন।
কেয়ার হাসপাতালের চিকিত্সক সাবাউদ্দিন শেখের সঙ্গে শেখ একটি ব্যবস্থাও গড়ে তুলেছেন, যাতে কারো অক্সিজেন দরকার হলে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে এর ব্যবহারের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়।