মুম্বই: দীর্ঘ ১২ ঘন্টার লড়াই কাজে এল না। উত্তর মুম্বইয়ের পিম্পরিপদা এলাকায় প্রবল বৃষ্টিতে দেওয়াল ভেঙে ধ্বংস্তস্তুপে চাপা পড়ে গিয়েছিল ১৫ বছরের এক কিশোরী। রাত দুটো থেকে ধ্বংস্তস্তুপ থেকে সঞ্চিতা গ্যানোরের আর্তি ভেসে আসছিল। বলছিল, এখান থেকে আমাকে বার করো। কখনও একটু জল চাইছিল সে। ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছিল তার কন্ঠস্বর। অবশেষে এদিন বিকেলে ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করা হল সঞ্চিতাকে। তবে জীবিত নয়, তার নিথর দেহ বের করে আনলেন উদ্ধারকারীরা।


ঘটনাস্থলে উপস্থিত চিকিত্সক জানিয়েছেন, মেডিক্যাল টিম মেয়েটিকে বাঁচানোর সব ধরনের চেষ্টাই করে। কিন্তু তাকে বাঁচানো গেল না। তার পা ধ্বংসস্তুপে আটকে গিয়েছিল। তাই তাকে উদ্ধার করতে এতটা সময় লাগল। মেয়েটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে আমরা সব ধরনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হল না।
উদ্ধারকারী এক কর্মী জানিয়েছেন, সঞ্চিতা সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছিল, জলও চাইছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা ওই উদ্ধারকারী বলেছেন, দেওয়াল ভেঙে পড়ার পরই আমরা ধ্বংসস্তুপে আটক এক শিশুকে উদ্ধার করি। রাত ২ টো থেকে সঞ্চিতা নামে মেয়েটি সাহায্যের আর্তি জানাচ্ছিল। বারবার বলছিল-আমাকে বাইরে বার কর।
সঞ্চিতার চিত্কার শোনার পর উদ্ধারের কাজ জোরদার করা হয়। সময় যত এগিয়েছে ক্ষীণ হয়ে আসে তার কন্ঠস্বর। একটু জল চাইছিল সে।
দেওয়ালের ছোট একটা অংশ থেকে মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য পথ বের করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মু্ম্বইয়ের মালাড এলাকায় প্রবল বর্ষণে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৯। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ এর আগে মৃতদের আত্মীয় মৃতদের পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মহিন্দ্র সিংহ অভি, সরকার সবার জন্য আবাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এজন্য কিছু করেনি। অবিলম্বে তাঁদের পুনর্বাসনের দাবিও তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা রাজনৈতিক দলগুলির ওপরও তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। প্রমোদ পাওয়ার নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটের সময় আসে।কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনে না। ভোট মিটলেই তারা উধাও হয়ে যায়। তারা আমাদের জন্য কিছুই করেনি।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দেওয়াল ভেঙে ৬০-৭০ টির মতো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁরা এজন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন।