জেহানাবাদ: শাহিনবাগ, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার প্রতিবাদ-অবস্থানে উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা রুজু হয়েছে শারজিল ইমামের বিরুদ্ধে। মামলার সূত্র ধরে বিহার পুলিশ অভিযান চালাল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-বিরোধী কর্মী তথা জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) গবেষক পড়ুয়ার জেহানাবাদের পৈত্রিক ভিটেয়। রবিবার রাতে কাকো থানা এলাকায় শারজিলের বাড়িতে হানা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেহানাবাদের পুলিশ সুপার মনীশ কুমার। তাঁর বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলার তদন্ত করা ‘কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি তাঁদের সাহায্য চাওয়ার’ পর পুলিশি অভিযান চলে বলে জানান তিনি। শারজিল সেসময় বাড়িতে ছিলেন না। তাঁকে না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর দুজন আত্মীয় ও তাঁদের গাড়িচালককে আটক করে পুলিশ।
আইআইটি মুম্বইয়য়ের কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্য়াজুয়েট শারজিল জেএনইউয়ের সেন্টার ফর হিস্টরিকাল স্টাডিজ-এ গবেষণা চালাতে দিল্লি চলে গিয়েছিলেন। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ, আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর বিরুদ্ধে অসমের ভারত থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। সেই মন্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তারপরই দায়ের হয় রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা।
এর আগেও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (এএমইউ) দেওয়া ভাষণের পর আলিগড়ের থানায় একই অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল শারজিলের বিরুদ্ধে। এছাড়া অসমেও তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কঠোর ইউএপিএ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শারজিলের বাবা প্রয়াত আকবর ইমাম ছিলেন স্থানীয় জেডি (ইউ) নেতা। তিনি বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন, যদিও জিততে পারেননি।
এদিকে ছেলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা রুজু হওয়া নিয়ে তাঁর মা আফসান রহিমের দাবি, আমার ছেলে নির্দোষ। ও চোর-ডাকাত, পকেটমার নয়। একটা উজ্জ্বল ছেলে। ভগবানের নামে শপথ করে বলতে পারি, ও কোথায়, জানি না। কিন্তু গ্যারান্টি দিতে পারি, মামলা রুজু হওয়ার খবর জানলে ও তদন্তকারী সংস্থার কাছে গিয়ে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করবে। কয়েক সপ্তাহ আগে টেলিফোনে ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হলেও দীর্ঘদিন ছেলেকে সামনাসামনি দেখেননি বলে জানিয়েছেন আফসান। ছেলের সমর্থনে তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই সিএএ ও সারা দেশে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) চালু হওয়ায় ভীতি, আশঙ্কা ঘিরে বিচলিত বোধ করেছে ও। সিএএ, এনআরসি শুধু মুসলিমদের নয়, সব গরিব মানুষকেই বিপদে ফেলবে বলে দাবি করেন তিনি।
আফসান বলেছেন, শাহিনবাগের আন্দোলনের ১৫ দিন বাদে ও আন্দোলনকারীদের অবস্থান তুলে নিয়ে মাসখানেক অপেক্ষা করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু ওরা পিছু হটল না। ও চাক্কা জ্যামের (রাস্তা অবরোধ) কথা বলেছিল। ও নেহাত শিশু, রাষ্ট্রদ্রোহিতার জন্য় লোক খেপানোর ক্ষমতা ওর নেই।