কলকাতা: নারদ মামলায় চার হেভিওয়েটের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হাইকোর্টে। ২ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়।


অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি শর্ত দেওয়া হয়েছে,    ‘নারদমামলা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন না হেভিওয়েটরা। শুধুমাত্র নারদ মামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য বা সাক্ষাৎকার নয়। সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য বা সাক্ষাত্কার নয়। কোনও তথ্য প্রমাণ বিকৃত করা চলবে না।’


এর ফলে চার নেতা-মন্ত্রীকে আর গৃহবন্দি থাকতে হবে না। 


এর আগে এদিন বেলা ১২ টা নাগাদ হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হয়। এদিন শুনানির শুরুতে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ অভিযুক্তদের শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেওয়া যায় কীনা সে বিষয়ে ভাবছে আদালত।এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়ালতকারী তুষার মেহতার মতামত চায় আদালত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘অনেকদিন এই মামলা চলতে পারে।ততদিনের জন্য এই অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া যেতে পারে।চূড়ান্ত নির্দেশের পর প্রয়োজনে জামিন খারিজ করা যেতে পারে।' ‘মামলা ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে না’,তুষার মেহতাকে আশ্বস্ত করে জানান রাজেশ বিন্দল।


প্রভাবশালী তত্ত্বে এই ভাবনার বিরোধিতা করে তুষার মেহতা বলেন,   ‘জামিন দেওয়া হলেও চারজন যেন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি না হন,  সেই নির্দেশ দেওয়া হোক।’


বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন,   ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অভিযুক্ত-সাধারণ মানুষের মধ্য আলাপচারিতার সুযোগ নেই। এঁরা মানুষের পরিষেবার কাজের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৭তে মামলা শুরু, আপনারা তখন তাঁদের গ্রেফতার করেননি।তাঁরা তখন যা প্রভাবশালী ছিলেন এখনও তাই আছেন।‘তাহলে এখন কেন গ্রেফতার ?’


গত ১৭ মে সাত সকালে চার হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। স্বাভাবিকভাবেই পাঁচ বছর আগের নারদ-মামলায় একসঙ্গে চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারি সাড়া ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু, তারপর এই বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই একের পর এক নতুন বাঁক নেয়। ১৭ মে অর্থাৎ গ্রেফতারের দিন সন্ধেতেই চার হেভিওয়েটকে জামিন দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত। 
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই  নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছে যায় সিবিআই। রাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়।ফলে জেল হেফাজতে যেতে হয় চার হেভিওয়েটকে।২১ মে চার হেভিওয়েটের জামিন-মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতভেদ তৈরি হয়। ২১ মে 
চার হেভিওয়েটের জামিন-মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতভেদ তৈরি হয়।শেষমেশ চার হেভিওয়েটকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ডিভিশন বেঞ্চে দুই বিচারপতির মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায়, মামলাটি পাঠানো হয় হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। গত সোমবার পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। কিন্তু তার আগে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। পরে সেই আবেদন প্রত্যাহার করে সিবিআই। এরপর হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে চার হেভিওয়েটের জামিন মঞ্জুর হল।