কলকাতা : আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন ফিরহাদ হাকিম। কোনওক্রমে কান্না চাপার চেষ্টা করেও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে ভাঙা গলায় বললেন, 'কোভিড পরিস্থিতি সামলানোর জন্যই আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কলকাতার মানুষকে আমাকে বাঁচাতে দিল না।' সারাদিনের টানাপোড়েনের পর রাত সোওয়া একটা নাগাদ নিজাম প্যালেস ছাড়ার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর প্রধান তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম।


প্রেসিডেন্সি জেলের উদ্দেশে বেরোনোর সময় প্রথমে বিচার ব্যবস্থার ওপর তাঁর আস্থার কথাও ফের জোর গলায় বলে যান তৃণমূল নেতা। ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'আইনি ব্যবস্থার ওপর আস্থা আছে। ভরসা রাখি বিচারবিভাগের মধ্যে দিয়েই আমরা ন্যায়বিচার পাব।' পাশাপাশি সিবিআইয়ের তরফে হেনস্থার প্রসঙ্গ সামনে তিনি তাঁর সংযোজন, 'পপুলার হওয়াটা অন্যায় নয়। আমি কী সিবিআইকে সহযোগিতা করিনি। কেন আমার জামিন থেকে বঞ্চিত হলাম?' প্রসঙ্গত সিবিআইয়ের প্রভাবশালী তকমা নিয়েই ঘুরিয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন তিনি।


নিজাম প্যালেস থেকে কনভয়ে করে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় ফিরহাদ হাকিমদের। পিছনের গেট দিয়ে ৪ নেতাকে নিয়ে বের করা হয়। সামনের দুটি ও পিছনের গাড়িতে করে গাড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মাঝের দুটি গাড়িতে চার মন্ত্রী। মোট ৩০-৪০ জন কেন্দ্রীয় বাহিনী ৪ নেতার কনভয় কর্ডন করে নিয়ে যায়। প্রেসিডেন্সি জেল অথরিটির সঙ্গে সিবিআইয়ের আগেই কথা। জেলে গিয়ে পেপার ওয়ার্কের পর জেল অথরিটিকে হাতে  ৪ নেতার মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্ট ও হাইকোর্টের অর্ডার তুলে দেওয়া হয়।


রাত দেড়টা নাগাদ যখন প্রেসিডেন্সে জেলে পৌঁছয় নেতাদের কনভয় তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী। ৪ নেতার গাড়ি যখন জেল চত্বরে এসে পৌঁছনোর আগে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাদেরকেও স্লোগান দেওয়া থেকে বিরত থাকার আবেদন জানান ফিরহাদ পত্নী।


ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জামিনের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর নিজাম প্যালেসে হাজির হয়েছিলেন ফিরহাদ কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিম। তিনি সেখানে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকারপ আবেদন জানান। পাশাপাশি অভিযোগ করেন, জামিনের পরও কেন ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল, ওই সময়ের মধ্যে কী হয়েছে, তার কিছুই আমাদের জানানো হয়নি। আসলে বাংলার মানুষের ভোট না পেয়ে মোদি-শাহ জুটি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন।