বসপা নেতারা এর নিন্দায় বলেছেন, বিজেপি নেতা-নেত্রীরা এতটা নীচে নেমেছেন! সম্প্রতি মায়াবতী উত্তরপ্রদেশে লোকসভা ভোট সামনে রেখে জোট করেছেন সমাজবাদী পার্টির (সপা) সঙ্গে। সপা সভাপতি অখিলেশ সিংহ যাদব মায়াবতী সম্পর্কে বিজেপি বিধায়কের আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ করে তা ওদের নৈতিক দেউলিয়াপনার নিদর্শন বলে জানিয়েছেন।
মুঘলসরাইয়ের বিধায়ক সাধনা বসপা-সপা বোঝাপড়াকে খোঁচা দিয়ে জনসভায় বলেন, ১৯৯৫ এর কুখ্যাত লখনউ গেস্ট হাউস কেলেঙ্কারিতে সপা-র হাতে অপমানিত হয়েছিলেন মায়াবতী। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওদের সঙ্গেই নির্বাচনী রফা করলেন। উনি নারীজাতির কলঙ্ক!
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে এক গেস্ট হাউসে মায়াবতী ও অন্য বসপা নেতাদের ওপর হামলা করেছিল সপা কর্মীরা। এ ঘটনায় বহু বছর ধরে চরম বৈরিতার সম্পর্ক ছিল দুদলের। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ওনার আত্মসম্মান বোধই নেই। কার্যত ওনার শ্লীলতাহানি হয়েছিল সেদিন। বস্ত্রহরণ হয়েছিল। ইতিহাসে দেখি, দ্রৌপদী নিগ্রহের পর প্রতিশোধের শপথ নিয়েছিলেন। কিন্তু এই মহিলা, যাঁর বস্ত্রহরণ হয়েছিল, নিজের নির্যাতনকারীর সঙ্গেই সমঝোতা করলেন! ক্ষমতার জন্য নিজের মর্যাদা বিকিয়ে দিলেন! আমরা মায়াবতীজির নিন্দা করছি। যে মহিলা ক্ষমতা, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য অপমান হজম করতে পারেন, তিনি নারী সমাজের কলঙ্ক।
বিজেপিকে নিশানা করে অখিলেশ ট্যুইট করেছেন, মুঘলসরাইয়ের বিজেপি বিধায়কের আপত্তিকর মন্তব্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বিজেপির নৈতিক দেউলিয়াপনাই এতে ফুটে উঠছে। এটা সারা দেশের মহিলাদের অপমান।
বসপা নেতা সতীশ চন্দ্র মিশ্রও বলেন, বিজেপি বিধায়কের শব্দচয়ন থেকেই দলটা কোন স্তরে নেমেছে, পরিষ্কার। বসপা-সপা জোট ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি নেতাদের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে, ওঁদের আগ্রা, বেরিলির মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। বিজেপির একার জোরে আসন্ন নির্বাচনে একটা আসনেও জেতার ক্ষমতা নেই। সপা-বসপা জোটে ওরা আতঙ্কিত। দেশের মানুষই বিজেপিকে এবার ওদের আসল স্থান দেখিয়ে দেবেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী ট্যুইট করেছেন, নীতি, ভাবনাচিন্তার প্রশ্নে মতভেদ থাকতেই পারে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের শাসক বিজেপির এই নেত্রীর মন্তব্য, এক মহিলার আরেক মহিলা সম্পর্কে এমন অবমাননাসূচক মন্তব্য করছেন, দর্শকাসনে বসা লোকজন উল্লাস প্রকাশ করছেন, এটা খুব উদ্বেগজনক।
জাতীয় মহিলা কমিশন সাধনা সিংহের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে নোটিস দিচ্ছে বলে খবর। মিডিয়ায় প্রকাশিত তাঁর মন্তব্য স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে বিবেচনায় রেখে কাল সাধনাকে তারা নোটিস পাঠাবে, জানতে চাইবে, কেন তিনি ওই মন্তব্য করেছেন।