নয়াদিল্লি:  নির্ভয়াকাণ্ডে এক দোষীর মৃত্যুদণ্ডের রিভিউ পিটিশনের আবেদন খারিজ হয় সুপ্রিম কোর্টে।  ২০১২য় দিল্লির তরুণীর গণধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্ত অক্ষয় কুমার সিংহের মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। দীর্ঘ সাত বছর লড়াইয়ের পর আজকের রায়ে সাময়িক স্বস্তি পায় নির্ভয়ার পরিবার। আদালত থেকে বেরিয়ে তাঁর মা আশাদেবী বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আমি খুশি। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পথে আরও একধাপ এগোলাম।’’  সঙ্গে সঙ্গেই নির্ভয়ার পরিবার আজই পাতিয়ালা হাউস কোর্টে চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করার আর্জি জানায়।
আদালতে ফাঁসি কার্যকর করার নির্দেশ এগিয়ে আনার আবেদন জানান তাঁরা। ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির ছিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার অপরাধীও। কিন্তু পাতিয়ালা হাউস আদালত ওই আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দেয় ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যেই তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে নতুন নোটিশ জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।  এই নোটিশের ভিত্তিতে অপরাধীরা আবার ক্ষমাভিক্ষার আবেদন  জানাতে পারবে।
এরপরই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নির্যাতিতার মা। তিনি কার্যত ভেঙে পড়ে বলেন,  ‘‘যেখানেই যাচ্ছি অপরাধীদের অধিকারের কথা বলা হচ্ছে। আমাদের অধিকারের কী হবে? ’’
বারবার দোষীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি পিছিয়ে যাওয়ার কার্যত হতাশ নির্ভয়ার মা। তিনি বলেন, ৭ বছর ধরে আইনের দরজায় দরজায় ঘুরছেন তাঁরা। কিন্তু আজও নির্ভয়া অপরাধীদের অধিকার নিয়েই যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে কথা হচ্ছে।
নির্যাতিতার মায়ের কথা শুনে বিচারক বলেন, আপনার প্রতি পূর্ণ সহানুভূতি আদালতের আছে। আমরা এখানে আপনার আর্জি শুনব কিন্তু কিন্তু আইনি নিয়মকানুনও আছে।
আদালতের পক্ষ থেকে তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অন্য অপরাধীরাও রাষ্ট্রপতির কাছে মৃত্যদণ্ড মকুবের আর্জি জানাতে চান কি না। আদালত জানায়, এর জন্য অপরাধীদের আর ৭ দিন সময় দেওয়া হবে। তারপরই আদালত মামলার শুনানি ৭ জানুয়ারি অবধি মুলতবি রাখে।
বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে অক্ষয়ের আর্জি খারিজ হয়ে গেলেও, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে  প্রাণভিক্ষার আবেদন জানাতে পারে অক্ষয়। তার জন্য আদালতে তিন সপ্তাহের সময় চান তার আইনজীবী এপি সিংহ। কিন্তু সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোই উচিত। তাতেই সম্মতি দেয় আদালত। সেই সঙ্গে আদালত এও জানিয়ে দেয়,  রায় পুনর্বিবেচনা মানে নতুন করে মামলার শুনানি নয়।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বরের রাতে, চলন্ত বাসের মধ্যে ২৩-বছর বয়সী প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা করে ৬ জন। এই চারজন বাদে আরেক অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করে। ষষ্ঠজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় জুভেনাইল হোমে তিন বছর কাটিয়ে ছাড়া পায়।