নয়াদিল্লি: আজ নির্জলা একাদশী। বহু ধর্মপ্রাণ মানুষ এই দিনটি পালন করছেন। আজ ভোরে বহু মানুষ বারাণসীতে গঙ্গাস্নানের মাধ্যমে দিন শুরু করেন। গতকাল ২০ জুন বিকেল ৪.২১ মিনিট থেকে শুরু হয় একাদশী তিথি। এই তিথি শেষ হয়েছে আজ দুপুর ১.৩১ মিনিটে। তবে উপবাস ভঙ্গের পরম সময় হল কাল ভোর ৫.২৪ মিনিট থেকে সকাল ৮.১২ মিনিটের মধ্যে। কাল দ্বাদশী তিথি শেষ হচ্ছে সকাল ১০.২২ মিনিটে।


নির্জলা একাদশী পালন করা মোটেই সহজ নয়। সারা বছর ২৪টি একাদশী ব্রত রয়েছে। তার অন্যতম আজকের নির্জলা একাদশী। এই ব্রত পালন করার জন্য় সাহস ও সঙ্কল্প দরকার। ভগবান বিষ্ণুর ভক্তরা এই দিনটিতে জলও স্পর্শ করেন না। অনেকে বিষ্ণুর আশীর্বাদ লাভের আশায় পরপর দু’দিন উপবাস করেন। 


সারা বছর ধরে যতগুলি ব্রত পালন করেন পুণ্যার্থীরা, তার মধ্যে নির্জলা একাদশীই কঠিনতম। শাস্ত্রজ্ঞরা বলেন, এই একাদশী পালন করতে পারলে সবচেয়ে বেশি উপকার হয়। অনেকে সারা বছর ধরে ২৪টি একাদশী ব্রত পালন করতে পারেন না। তাঁরা শুধু নির্জলা একাদশী ব্রত পালন করেন।


নির্জলা একাদশী ‘পাণ্ডব একাদশী’, ‘ভীমসেনী একাদশী’ বা ‘ভীম একাদশী’ নামেও পরিচিত। জনশ্রুতি অনুযায়ী, মহাভারতের দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীম একাদশীর দিনেও না খেয়ে থাকতে পারতেন না। ফলে তাঁকে বাদ দিয়েই চার পাণ্ডব ও তাঁদের স্ত্রী দ্রৌপদী একাদশী ব্রত পালন করতেন। এই ব্রত পালন করতে না পেরে মর্মাহত হয়ে মহর্ষী ব্যাসদেবের সাহায্যপ্রার্থী হন ভীম। তাঁকে ব্যসদেব উপদেশ দেন, বাকি একাদশী ব্রতগুলি পালন করতে না পারলেও, নির্জলা একাদশী পালন করা উচিত। সেই উপদেশ মেনে নির্জলা একাদশী পালন করেন ভীম। 


জ্যেষ্ঠ শুক্লপক্ষের একাদশ দিনে নির্জলা একাদশী ব্রত পালিত হয়। দশমী তিথি থেকে উপবাস শুরু করেন ভগবান বিষ্ণুর উপাসকরা। দ্বাদশী তিথির সকালে উপবাস পর্ব শেষ হয়। সূর্যোদয়ের আগে গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, নর্মদা, কৃষ্ণা, কাবেরী সহ বিভিন্ন নদীতে স্নান সেরে পরিচ্ছন্ন বস্ত্র পরিধান করে বাড়িতে প্রদীপ জ্বালিয়ে বিষ্ণুর পুজো করেন ভক্তরা।