নয়াদিল্লি: কাশ্মীর স্বাভাবিক। সংসদে এমনটাই দাবি করলেন অমিত শাহ। তবে একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, উপত্যকায় ইন্টারনেট পরিষেবা তখনই পুনরায় চালু হবে, যখন স্থানীয় প্রশাসন সঠিক মনে করবে।
বুধবার, রাজ্যসভায় কাশ্মীরের স্টেটাস রিপোর্ট পেশ করেন অমিত শাহ। সেখানে তিনি জানান, ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরায় চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় প্রশাসনই। বলেন, কাশ্মীরে এখনও পাকিস্তান কিছু কার্যকলাপ করে চলেছে। সবদিক খতিয়ে দেখে স্থানীয় প্রশাসন যখন ঠিক মনে করবে, তখন তারা ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করে দেবে।
একমাত্র ইন্টারনেট পরিষেবা বাদ দিয়ে মোটের ওপর কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানান তিনি। অমিত বলেন, কোনও পুলিশ স্টেশন অঞ্চলে কার্ফু জারি নেই। ওষুধপত্র যথেষ্ট রয়েছে। সেখানে কোনও সমস্যা নেই। মোবাইল মেডিসিন ভ্যানের বন্দোবস্ত রয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার দায়িত্ব রয়েছে প্রশাসনের হাতে। কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়, কাশ্মীরের পরিস্থিতি আর যাই হোক, স্বাভাবিক নয়। অমিত শাহ পাল্টা বলেন, ইন্টারনেট পরিষেবার চেয়ে জাতীয় সুরক্ষা অনেক বড় বিষয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলছেন, শ্রীনগরের রাস্তায় রক্তের স্রোত বইছে। আমি বলছি, এমন কিছুই হচ্ছে না। আমি খুশি যে, পুলিশের গুলিতে একজন নিরীহের মৃত্যু হয়নি। এমনকী, পাথর-ছোঁড়ার ঘটনা এই সময়ে ৮০৫ থেকে ৫৪৪-এ নেমে এসেছে। তিনি যোগ করেন, সেখানে সবকটি সংবাদপত্র ও নিউজ চ্যানেল স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে। কোনও সংবাদপত্রের বিক্রি কমেনি।
কাশ্মীরের আপেল-ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২২ লক্ষ মেট্রিক টন আপেল ইতিমধ্যেই উপত্যকা থেকে বেরিয়ে দেশের অন্যান্য জায়গার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। পরিবহণও ঠিকভাবে কাজ করছে। চাষীদের অতিরিক্ত সহায়তা করা হচ্ছে। কাশ্মীরে ৯৩ হাজারের বেশি ল্যান্ডলাইন চালু হয়েছে। পাশাপাশি, ৫৯ লক্ষের বেশি মোবাইল পরিষেবাও চালু হয়েছে।
রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করেন, কারফিউয়ের জন্য পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছেলেমেয়েরা। এই প্রেক্ষিতে অমিত শাহ পাল্টা বলেন, আমি যে পরিসংখ্যান পেশ করেছি, তা খারিজ করে দেখাক কংগ্রেস। আমি গুলাম নবিকে চ্যালেঞ্জ করছি, আমার পেশ করা তথ্য নস্যাৎ করুন।
গত ৫ অগাস্ট, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার মাধ্যমে জম্ম ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে কেন্দ্র। একইসঙ্গে, রাজ্যকে ভেঙে -- জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ-- দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়।
এরপর থেকেই উপত্যকায় কার্যত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ হয় স্কুল-কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের গৃহবন্দি করে ফেলা হয়। প্রচুর বাহিনী মোতায়েন করে গোটা উপত্যকাকে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়। গত ৩১ অক্টোবর থেকে দুই কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চলের গঠন কার্যকর হয়।