প্রশাসক কমিটি পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে সিদ্ধান্তে না পৌঁছলেও আইসিসি ও অন্য দেশগুলিকে আবেদন করেছে, যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদের উত্সভূমি, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুন। কমিটির প্রধান বিনোদ রাই বৈঠকের পর বলেন, ১৬ জুন আসতে এখনও অনেক দেরি। আমরা ওই ম্যাচ নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই। ক্রিকেটারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেন। বলেন, “আমরা সরকারের সঙ্গে কথা চালাচ্ছি। ১৬ জুনের ম্যাচ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।” একইসঙ্গে তিনি এও স্পষ্ট করে দেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে দুটি বিষয়ের উপর আলাদা করে নজর দিতে বলবে বোর্ড। এক, বিশ্বকাপ চলাকালীন ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা বাড়ানো হোক এবং দ্বিতীয়, যে দেশ সন্ত্রাসের আঁতুড় ঘর, তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করা হোক। এই বিষয়ে বিনোদ রাই বলেন, “আইসিসির কাছে আমরা মূলত দুটি বিষয়ের কথা বলব। বিশ্বকাপ চলাকালীন ক্রিকেটারদের আরও নিরপত্তা চাইব আমরা এবং সমস্ত ক্রিকেট খেলিয়ে দেশকে বলব, যে দেশ সন্ত্রাসের আঁতুড় ঘর, তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করুন।”
পিটিআই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের উপর চাপ তৈরি করলেও, এখনই পাকিস্তানকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দিকে এগবে না ভারত। কারণ, সেই ক্ষমতা বিসিসিআইয়ের নেই। ফ্লোর টেস্ট হলে ভারত তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মত জোগাড় করতে পারবে না। আইসিসি-তে সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিসিসিআইয়ের। একইসঙ্গে আগামী দিনে বিশ্বকাপ আয়োজনের বিষয়টিও মাথায় রয়েছে তাদের। এমন কোনও সিদ্ধান্ত বোর্ড নিতে চাইছে না, যেখানে ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং ২০২৩ সালে বিশ্বকাপে আয়োজনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পরই ভারত-পাক দুই দেশেই উত্তেজনার পারদ চরমে ওঠে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উত্তপ্ত হতে থাকে ক্রমশ। সেই আঁচ স্পর্শ করেছে ক্রিকেটকেও। ভারতীয়দের অনেকেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে বয়কট করার পক্ষে সওয়াল করেন। এমনকি প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে না খেলার পক্ষে দাঁড়ান। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, হরভজন সিংহ, আজহারউদ্দিনের মতো প্রাক্তনীরা বলছেন, বিরাট-আমিরের দ্বৈরথের প্রয়োজন নেই। যদিও উল্টো মত-ও রয়েছে। সুনীল গাওস্করের মতো কিংবদন্তী ক্রিকেটার বলছেন, ভারতের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই দোটানায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শেষ পর্যন্ত কী হবে? ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ভারত-পাক দ্বৈরথ হবে? নাকি সরে আসবে ভারত? এই প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়ই।