কলকাতা: রাজ্যের বিরোধী শিবিরের একটি অংশের দাবিকে কার্যত সিলমোহর দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোষণের দায়ে অভিযুক্ত করলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। সম্প্রতি কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গে নতুন রাজ্যপাল নিয়োগের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। রাজ্যপাল হয়ে আসছেন জগদীপ ধনকর। সরছেন কেশরীনাথ। বিদায় নেওয়ার আগে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি বললেন, মুখ্যমন্ত্রীর তোষণ নীতি রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে, তার ক্ষতি করছে। পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি নিয়ে তৃণমূল সরকারের দাবি খারিজ করেও তিনি বলেছেন, আইনশৃঙ্খলার হাল ফেরাতে হবে। তার প্রভূত উন্নতি প্রয়োজন। যদিও পরে কেশরীনাথ দাবি করেছেন, সামাজিক সৌহার্দ্য নিয়ে মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
রাজ্য রাজনীতিতে দ্রুত প্রধান বিরোধী দলের পরিসর দখল করতে চলা বিজেপি বরাবর যেসব ইস্যুতে মমতার সমালোচনায় সরব, সেগুলির অন্যতম ‘সংখ্যালঘু তোষণ’। ইমাম ভাতা, মহরম ও দুর্গাপুজোর বিসর্জন একই দিনে পড়ায় প্রতিমা নিরঞ্জন পিছনোর সরকারি নির্দেশের উল্লেখ করে বিজেপির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে সংখ্যালঘু তোষণ করছেন, যার ফলে রাজ্যে মাথাচাড়া দিচ্ছে মৌলবাদী শক্তি। সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যুতে মমতা, তৃণমূলকে বিঁধেছেন বিজেপির শীর্ষ কেন্দ্রীয়, রাজ্য নেতারা। এবার তাদের অভিযোগের সুরই বিদায়ী রাজ্যপালের গলায়। পাল্টা রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কটাক্ষ, উনি এসব বলে পয়েন্ট বাড়াতে চাইছেন। কেন কার্যকালের মধ্যে বলেননি?
পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেশরীনাথ মমতাকে কোনওরকম বৈষম্য, ভেদাভেদ না করে প্রতিটি নাগরিককেই সমান চোখে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদৃষ্টি আছে। নিজের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার শক্তিও আছে। কিন্তু তিনি নিজেকে সংযত রাখতে শিখুন। নিজের আবেগের রাশ টেনে রাখুন। কোনও কোনও সময় তিনি অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে যান।
সেইসঙ্গেই তিনি বলেছেন, ওনার তোষণ নীতির ফলে ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। ওনার সব নাগরিককে সমান চোখে দেখা উচিত বলে মনে করি। আমার বিশ্বাস, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বাসিন্দার কোনও বৈষম্য ছাড়াই সমান মর্যাদা প্রাপ্য। রাজ্যে কোথাও কি বৈষম্য দেখছেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, বৈষম্য হচ্ছে বলেই তো মনে হয়। ওনার বিবৃতিতেই বৈষম্য ফুটে উঠছে।