বাঙালিদের শৈশব-কৈশোর জুড়ে রয়েছে হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টে কিংবা বাঁটুল দ্য গ্রেটের কাণ্ডকারখানা৷ কেল্টুদার খুনসুটি, সুপারিন্টেন্ডেন্ট হাতিরাম পাতি বা ডানপিটে খাঁদু আর তার কেমিক্যাল দাদু, বাহাদুর বেড়াল, একের পর এক অমর সৃষ্টি ধরে রেখেছে তাঁর কলম, তুলি, পেন্সিল৷ ছোটবেলার কথা উঠলে এসব মনে পড়তে বাধ্য৷ এর সৃষ্টিকর্তার নাম বাঙালির মুখে মুখে৷ হ্যাঁ, প্রবাদপ্রতীম নারায়ণ দেবনাথ৷ বাঙালির এই প্রিয় মানুষকেই দেওয়া হচ্ছে পদ্মসম্মান৷ এবছরে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হচ্ছেন লেখক-চিত্রশিল্পী নারায়ণ দেবনাথ ৷
নারায়ণ দেবনাথের পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরে। তবে তাঁর জন্ম ১৯২৫ সালে হাওড়া জেলার শিবপুরে। ভর্তি হন ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজের চিত্রকলা বিভাগে। সময়টা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৷ আর এই টালমাটাল সময়ের কারণে শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। কিন্তু তত দিনে অপার উৎসাহে রপ্ত করেছেন আঁকাআঁকির যাবতীয় কলাকৌশল আর দর্শন। কেরিয়ার শুরু প্রসাধনসামগ্রীর লোগো, মাস্টহেড আর সিনেমা কোম্পানির বিভিন্ন লিফলেটের কাজ করে। তারপরেই হাতে এসে যায় শুকতারা পত্রিকা। ব্যস, সেখানেই প্রথম তাঁর হাত থেকে সৃষ্টি হয় বাঁটুল দ্য গ্রেট ৷ তারপর একে একে নন্টে-ফন্টে ও হাঁদা ভোঁদা ৷ যা কিনা বাঙালির ছোটবেলাকে এখনও মাতিয়ে রাখে ৷
সামাজিক কাজে নিজের ছাপ ফেলে ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন সাঁওতাল সমাজের গুরুমা কমলি সোরেন। সাহিত্য ও শিক্ষায় ‘পদ্মশ্রী’ পাচ্ছেন ধর্মনারায়ণ বর্মা, সুজিত চট্টোপাধ্যায় ও জগদীশচন্দ্র হালদার। কামতাপুরী ভাষার প্রসারে বিশেষ অবদান রেখে কামতারত্ন হিসেবে পরিচিত হয়েছেন ধর্মনারায়ণ বর্মা। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের অশীতিপর শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘সদাই ফকিরের পাঠাশালা’র জন্য পরিচিত। বছরে দু’টাকা দক্ষিণায় ৩০০–রও বেশি পড়ুয়াকে পড়ান তিনি।