নয়াদিল্লি: তালকাটোরা স্টেডিয়ামে পড়ুয়াদের মুখোমুখি প্রধানমন্ত্রী। পরীক্ষার টেনশন সামলানো নিয়ে, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর। উত্তর দিলেন বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়াদের প্রশ্নের। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে হাজির থাকার জন্য মনোনীত করা হয়েছে ২ হাজার পড়ুয়াকে। কী কী বললেন মোদি, চোখ রাখব।

- ২০২০ মানে নতুন দশক শুরু হল। এই দশকের জন্য পড়ুয়াদের বিশেষ শুভকামনা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অনেক কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করতে হয়। সেই সঙ্গে তার থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়।

- দেশের বিভিন্ন কোণে যুবকরা কী ভাবছে জানতে পারি। যেখানেই যুবকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয় আমি বলি।

-নবম শ্রেণিতে উঠলেই মাথায় চিন্তার ভার চেপে বসে । আমরা বিফলতার মধ্যেও সাফল্যের শিক্ষা পেতে পারি । বিফল হওয়া মানেই সাফল্যের দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।দাঁড়িয়ে গেলে তো আর একধাপও এগোনো যাবে না।

- একজন ব্যক্তির সংকল্পও দলের মানসিকতা বদলে দেয়। আবেগকে যদি নিজের মত করে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে মুড বদলে যায়। এখন জীবনের সাফল্যের মাপকাঠি পরীক্ষার নম্বর হয়ে গেছে । কিন্তু পৃথিবী অনেক বদলে গেছে।

- পরীক্ষার অঙ্কে এখন আর জীবন চলে না। পরীক্ষার নম্বর দিয়ে সবকিছু নির্ধারিত হয় না। নম্বর ভালো না হলে জীবন শেষ হয়ে গেল এমনটা নয়।

- বাংলার এক ছাত্রী প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে, পড়াশোনা ও কো-ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে কীভাবে? মোদি তাঁর জবাবে বলেন, কো-ক্যারিকুলার অ্যাক্টিভিটি ছাড়া ছাত্র-ছাত্রীরা রোবট তৈরি হবে।

- অভিভাবকদের ক্ষেত্রে বাচ্চার নানারকম ট্রেনিং দেওয়া এখন ফ্যাশন। তখন পড়াশোনার মত এসব নিয়েও চাপ দিতে শুরু করে। তখন বাচ্চাদের পক্ষে এটা খুব কঠিন হয়ে যায়। ‘ বাচ্চারা কীসে আগ্রহী সেটা বোঝাটা জরুরি।

- এখন প্রযুক্তিই জীবন হয়ে উঠেছে। তাই প্রযুক্তিকে ভয় পাওয়া চলবে না। আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা জানতে হবে। কিন্তু আমি আমার প্রয়োজনে প্রযুক্তি ব্যবহার করবো।

- স্মার্ট ফোন আমাদের অনেকখানি সময় চুরি করে নেয়। তার থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে কিন্তু তার দাসত্ব নয়!

- প্রযুক্তি মানুষের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এখন পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কথাবার্তা কমিয়ে দিয়েছি। দিনের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট সময় 'টেকনোলজি ফ্রি হাওয়ার' হিসেবে রাখা দরকার।

- অরুণাচলের এক ছাত্রী প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে নাগরিক কর্তব্য নিয়ে। তাঁর উত্তরে মোদি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব অতি সুন্দর জায়গা। মানুষ সেখানে পরস্পরের দেখা হলে জয় হিন্দ বলে। এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত এই আদর্শ পড়ুয়াদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।

- মোদি বলেন, অধিকার এবং কর্তব্য কখনওই আলাদা নয়। আমাদের কর্তব্যেই সবার অধিকার নিহিত আছে। মহাত্মা গাঁধী বলেছিলেন, সবাই যদি কর্তব্য করে তাহলে সবাই সবার অধিকারও পাবে।

- এত বড় দেশে রাষ্ট্রেরও কিছু কর্তব্য আছে। স্বাধীনতার ১০০ বছরে আজকের স্কুল পড়ুয়ারা নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গার থাকবে। দেশের অর্থনীতির উন্নতি হলে উপকার হবে আজকের ছাত্রদের।

- সাফল্য ও ব্যর্থতাকে কীভাবে দেখা উচিত? এর উত্তরে মোদি টেনে আনেন ইসরোর চন্দ্রযান-২-র অভিযান প্রসঙ্গ। বলেন, প্রত্যেক ব্যর্থতাই আসলে সাফল্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।

- ব্যর্থতাই সাফল্যের দরজা? এই প্রসঙ্গে ২০০১ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের লড়াকু ব্যাটিং-এর কথা বলেন মোদি। ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্রাবিড় ও লক্ষ্মণের কঠিন লড়াই কীভাবে সেই খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে এনেছিল ভারতকে, সেই কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।