পটনা: বিহারে মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের শেল্টার হোম ‘আসরা’-য় সম্প্রতি দুই আবাসিকার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতারি। পটনার রাজীব নগর থানার অধীনে নেপালি নগর এলাকার ওই হোম চালাত যে এনজিও, তার ম্যানেজার ও সেক্রেটারিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রাজীব নগর থানার স্টেশন হাউস অফিসার রোহন কুমার জানান, গতকাল রাতে চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। এঁদের মধ্যে অনুমায়া নামের এনজিও-র ম্যানেজার চিরন্তন কুমার ও সেক্রেটারি মনীষা দয়াল গ্রেফতার হয়েছেন। দুজনকে জেরা করছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী দল। তাতে আছেন জেলাশাসক কুমার রবি ও এসএসপি মনু মহারাজ। বাকি দুই অভিযুক্ত, ওই হোমের সঙ্গে যুক্ত এক ডাক্তার ও এক নার্স দুই আবাসিকার মৃত্যুর পর থেকেই পলাতক।

একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রাক্তন মডেল মণীষাই ওই হোমের মালকিন। পটনার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার পাশাপাশি সমাজসেবা করা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। বিহারের নামী ফিল্ম ডিস্ট্রিবিউটরের ঘনিষ্ঠ। মহাগঠবন্ধনের আমলে মন্ত্রী থাকা আরজেডির এক বড় নেতার শ্বশুরবাড়ির দিকের একজন।
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে মণীষা বর্তমান ও প্রাক্তন শাসক শিবিরের বেশ কিছু নেতার সঙ্গে ছবি দিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে আছেন জেডি (ইউ)এর শ্যাম রজক, আরজেডির প্রাক্তন মন্ত্রী শিবচন্দ্র রাম, আরজেডি নেতা মৃত্যুঞ্জয় তেওয়ারি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়া। মণীষা বিহারে কর্পোরেট ক্রিকেট লিগ আয়োজনেও ছিলেন। ফেসবুক প্রোফাইলে ২০১০ থেকে অনুমায়া হিউম্যান রিসোর্স ফাউন্ডেশন, আত্মা ফাউন্ডেশন, ভামা শাহ ফাউন্ডেশনের মতো একাধিক এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত থাকার দাবি করেছেন মণীষা।

মুজফফরনগরের আশ্রয় হোমে যৌন কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ‘আসরা’ হোমে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসে।
রবি সাংবাদিকদের বলেন, দুই আবাসিকার ময়না তদন্তের রিপোর্টে বাইরে থেকে আঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ওদের ভিসেরা রিপোর্ট পরবর্তী পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
১৭ বছরের পুনম ও ৪০ বছরের বাবলি, ওই হোমের এই দুই আবাসিকা গত ১০ ও ১১ –র মাঝের রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের পিএমসিএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাঁদের মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানান সেখানকার ডাক্তাররা।
হাসপাতাল সূত্রের দাবি, পোস্ট মর্টেম হয়েছে দুজন এসআইয়ের সামনে। কিন্তু কেন তাঁরা সংশ্লিষ্ট থানাকে তা জানাননি, সে ব্যাপারে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পদস্থ পুলিশ অফিসাররা।
বিহারের সমাজ কল্যাণ ডিরেক্টর রাজ কুমার জানিয়েছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই মহিলাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে জানালেও তাঁর দপ্তরের যে প্রতিনিধি ওঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন, তিনি বলেছেন, চিকিত্সা চলাকালীন মৃত্যু হয়।