নয়াদিল্লি: ২০১৪-তে উন্নয়নের যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার গতি ত্বরান্বিত করতে দেশের মানুষ স্পষ্ট ‘জনাদেশ’ দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি সরকার শক্তিশালী, সুরক্ষিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে সবাই সামিল থাকবেন। সংসদের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে এ কথা বললেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সংসদের সেন্ট্রাল হলের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, এবার সাধারণ নির্বাচনে মহিলারা প্রচুর সংখ্যায় তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
১৭ তম লোকসভা গঠনের পর প্রথামাফিক এই ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, এবারের লোকসভায় রেকর্ড সংখ্যক ৭৮ জন মহিলা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক এবারই প্রথম সদস্য হয়েছেন।
কোবিন্দ বলেছেন, এবারের নির্বাচনে দেশের মানুষ স্পষ্ট জনাদেশ দিয়েছেন। সরকারের প্রথম দফার কাজের মূল্যায়ণের পর এবার মানুষ আরও বেশি করে তাঁদের রায় দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এভাবে ২০১৪-তে যে উন্নয়নের প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা ত্বরান্বিত করার রায় দিয়েছেন মানুষ।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ীরা যাতে মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারেন সেজন্য তাঁদের জন্য পেনশন প্রকল্প চালু করেছে সরকার।
সাধারণ নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন, কোটি কোটি আধিকারিক ও নিরাপত্তা কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন কোবিন্দ। এবারের ভোটে রেকর্ড গড়ে ৬১ কোটি মানুষের মতাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তাও তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেছেন, ২০১৪-এর মধ্যে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আসন সংখ্যা ৫০ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এবং আরও ২ কোটি আসন তৈরি করা হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আয়ুষ্মাণ ভারত প্রকল্পে ২৬ লক্ষ দরিদ্র রোগী উপকৃত হয়েছেন এবং ২০২২-এর মধ্যে ওয়েলনেস সেন্টারগুলির কাজ শুরু হয়ে যেতে পারে।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, সরকার আবাসন, স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সুবিধা দরিদ্রদের দিচ্ছে। কারণ, তাঁদের ক্ষমতায়ণের মাধ্যমেই দারিদ্র দূর করা সম্ভব।
ভবিষ্যতে জল সংকট গভীর হতে পারে। সেজন্য জল শক্তি মন্ত্রক গঠন জল সংরক্ষণের একটি পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি।
কোবিন্দ আরও বলেছেন, নতুন শিল্পনীতি খুব শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। জিএসটি-র সরলীকরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেছেন, গত পাঁচ বছরে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে ৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যয়ে ৮ কোটি ভুয়ো সুবিধা প্রাপককে উত্খাত করা গিয়েছে। এতে ১.৪১ লক্ষ কোটি টাকা বেঁচেছে।
সরকার দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির আরও প্রসার ও কার্যকর করবে বলেও জানিয়েছেন কোবিন্দ।
গতি, নিরাপত্তা ও পরিবেশের ওপর জোর দিয়ে সরকার একটি পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে এবং কাবেরী, পেরিয়ার, নর্মদা ও গোদাবরীর মতো নদীকে দূষণমূক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন কোবিন্দ।