কলকাতা :'দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা। কালীপুজো, দীপাবলিও আসন্ন। আপনাদের সকলকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। '
এইভাবেই মহাষষ্ঠীর দুপুরে ভার্চুয়াল উদ্বোধনে ভাষণ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ঘোষক অঞ্জনা বসু হিন্দিতে কথা বললেও প্রধানমন্ত্রী বাংলার জনগণকে অভিনন্দন জানালেন বাংলাতেই। সেখানেই থেমে রইলেন না।

মোদির পুজো উদ্বোধনী ভাষণে উঠে এল ঠাকুর অনুকুলচন্দ্র থেকে বাবা লোকনাথ সকলের নাম। কথায় কথায় বাংলার নস্টালজিয়া উত্তম-সুচিত্রাকেও ছুঁয়ে গেলেন মোদি। বলতে গেলে স্বাধীনতা পূর্ব থেকে উত্তরকাল, বাংলার গর্বের সব বিষয়কেই ধরতে চাইলেন এদিনের বক্তৃতায়। রাজনৈতিক মহলে যে জল্পনা ছিল, ২১ র নির্বাচনের আগে জনসংযোগের উদ্দেশেই বিজেপির এই দুর্গাপুজো, তাতেই কিছুটা সিলমোহর দিলেন মোদি। তিনি যে বাংলার সেন্টিমেন্ট নিয়ে রীতিমতো চর্চা করেছেন, তা ধরা পড়ল বক্তৃতায়। বললেন, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও রাজা রামমোহন রায়ের নাম নিলেই অন্তরে বিশেষ অনুভূতির সৃষ্টি হয়। স্মরণ করলেন বিজ্ঞানে জগদীশচন্দ্র বসু ও আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান।

প্রধানমন্ত্রী বললেন, মনে হচ্ছে, দিল্লি নয়, বাংলাতেই আছি।   বাংলার মানুষ চিরকাল দেশকে উন্নতির দিশা দিয়েছে। মা দুর্গাকে ঘরের মেয়ে উমা রূপে আদর করা হয় বাংলায়, সেটাই ভারতীয় সমাজের আধার, বললেন তিনি। তাই 'বাংলার পূণ্যভূমিকে প্রণাম'। সেই রেশ টেনেই মোদি আত্মনির্ভর ভারতের পাশাপাশি সোনার বাংলা গড়ার আহ্বান জানান।   দেশের শ্রমিক ও কৃষকরা আত্মনির্ভর হলেই মা অন্নপূর্ণার কাছে 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে'-এই প্রার্থনা পূর্ণ হবে।

বক্তৃতায় তিনি  রবীন্দ্রনাথের ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’-এর দু’কলিও পাঠ করেন। বাংলাই দেশকে দিশা দেখিয়েছে 'মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই' বলে, স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দিতে বললেও বক্তৃতার শুরুতে ও শেষের অনেকখানিই ছিল বাংলায়। তিনি বলেন, আমরা যেন এভাবেই মায়ের ও দেশের সেবা করে যেতে পারি। শেষে তিনি উচ্চারণের ত্রুটির জন্য মার্জনা প্রার্থনাও করে নেন।