নয়াদিল্লি: আজ লোকসভায় রাষ্ট্রপতির জবাবি ভাষণে বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, 'বারবার বাধাদান বিরোধীদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। পরিকল্পনা করেই বিরোধীরা বাধা দিচ্ছেন। কেন এত বাধা? বিরোধীদের পরিকল্পনা হল, ক্রমাগত চিৎকার করে যেতে হবে। না হলে মিথ্যা ও গুজব ধরা পড়ে যাবে, সত্য সামনে চলে আসবে এবং তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। এভাবে মানুষের আস্থা অর্জন করা যায় না।'


আজ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় হইচই করতে থাকেন বিরোধী দলগুলির সাংসদরা। তাঁদের অন্যতম ছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁদের পাল্টা কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অধীরের নাম ধরে বলেন, ‘বাংলায় তৃণমূলের থেকে বেশি পাবলিসিটি পাবেন।’


প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, আমরা না চাইতেই দেওয়া হচ্ছে কেন? গ্রহণ করা বা প্রত্যাখ্যান করা আপনাদের উপর নির্ভর করছে। এটা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ পণের বিরুদ্ধে আইন চালু করার দাবি জানায়নি। কিন্তু তারপরেও দেশের প্রগতির জন্য এই আইন চালু করা হয়েছে। দেশের প্রগতির স্বার্থে তিন তালাক ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করার জন্য আইন তৈরি করা হয়েছে। তিন তালাক বিরোধী আইন আমরাই এনেছিলাম। প্রগতিশীল সমাজে এই ধরনের আইন প্রয়োজন।'


কৃষি আইন নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিক্ষেত্রে সংস্কার খুবই জরুরি ছিল। কংগ্রেস সাংসদরা আইনের রং নিয়েই চর্চা করছেন। তার চেয়ে বরং কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা হলেই ভাল হত। কৃষকরা বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার পক্ষপাতী সরকার। আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চলছে। কিন্তু কৃষি আইন নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে দেশে। কৃষি আইন চালুর পর কোনও কৃষক মান্ডি বন্ধ হয়নি। কৃষক মান্ডির সংস্কারে বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে। কংগ্রেস ও কয়েকটি দল প্রস্তুতি না নিয়েই আলোচনা করছে। আধুনিক সমাজে পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি। বিরোধীদের চিন্তাধারার পরিবর্তনও প্রয়োজন। মানুষকে এভাবে ভুল বোঝানো যাবে না। দেশের কৃষকদের আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে। কৃষকদের বিশ্বমানের করে তুলতে হবে। পুরনো চিন্তাধারা উপড়ে ফেলতে হবে। কৃষি পরিকাঠামোয় ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।’


প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশে বেসরকারিকরণেরও সমান গুরুত্ব রয়েছে। দেশের অগ্রগতির জন্য বেসরকারি সংস্থার ওপর ভরসা রাখতেই হবে। যুব সমাজকে যত গুরুত্ব দেব, ততই দেশের লাভ। কৃষক আন্দোলনকে আমি পবিত্র মনে করি। আন্দোলনজীবীরা স্বার্থপর হলে কী হয় দেখেছেন। টোল প্লাজায় ভাঙচুর চালানো কি পবিত্র আন্দোলন? আন্দোলনজীবীদের থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে জোর দেওয়া খুবই জরুরি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলে দেশের উন্নতি। সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।’


সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা সমালোচনা করে অধীর বলেন, 'কৃষক-মৃত্যু নিয়ে আমাদের যে বক্তব্য, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। সেই কারণেই আমরা ওয়াকআউট করেছি। তিনি স্বীকার করেছেন, কৃষি আইনে সংশোধন দরকার। এই আইনের ফলে কয়েকটি রাজ্য লাভবান হবে এবং কয়েকটি রাজ্য লাভবান হবে না। সবাই উপকৃত হবে না, এমন আইন আনার দরকার কী?'