কলকাতা: সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে আজ বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠক বসে। সেখানেই নিট-জেইই পরীক্ষা ইস্যুতে কেন্দ্রকে তুলোধনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।


বৈঠে মমতা বলেন, ‘করোনা মহামারীর আবহে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রেন চলছে না, যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থায় নিট-জয়েন্ট কী করে দেবেন ছাত্র-ছাত্রীরা?’


তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র ইউজিসি-র সিদ্ধান্ত আগেই পরিবর্তন করেছে। আমি এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আগেই অনুরোধ করেছি। পরীক্ষা স্থগিতের আবেদন ওঁকে জানিয়েছি।’


মমতার মতে, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় বিবেচনার অনুরোধ করতে পারতেন। এই বিকল্প পথ তো প্রধানমন্ত্রীর হাতে ছিল। আইনজীবীদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা যেত।’


মমতা বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারি। পরীক্ষা স্থগিতের আবেদন করতে পারি। পরীক্ষার্থীরা এ নিয়ে আমাদের সাহায্য চাইতে পারেন। সব মুখ্যমন্ত্রীকে এগিয়ে আসতে আহ্বান করছি।’


কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘আমাদের করের টাকা আমরা কেন্দ্রকে তুলে দিচ্ছি। মে-জুনে ৪১০০ কোটি টাকা পাওনা। আমরা কেন্দ্রের থেকে কিছুই পাইনি। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আমরা সরকার চালাব?’


মমতা যোগ করেন, ‘কোভিড চিকিৎসার বিপুল খরচের ভার। আমেরিকা ১০ শতাংশ জিএসটি কোভিড-খাতে ব্যয় করছে। মানুষের হয়ে লড়তে গেলেই আমাদের বিরক্ত করা হচ্ছে। এমন অত্যাচার আগে দেখিনি। কিছু খোলামেলাভাবে বলতে পারি না। প্রতিটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার অর্ধেক টাকা দিতে হচ্ছে রাজ্যকে। এ সব বললে, আমাকে যদি গ্রেফতার করে, করুক।’


তাঁর আগে, উদ্বোধনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, ‘জিএসটি-র বকেয়া নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে মোদি সরকার। গোটা প্রক্রিয়াটাই অগণতান্ত্রিক। কয়লা খনির বেসরকারিকরণেও আপত্তি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীরা। নতুন শিক্ষানীতি ভারতীয় সনাতন মূল্যবোধের পক্ষে ধাক্কা।’


প্রসঙ্গত, বিরোধীদের নিয়ে এই বৈঠকের জন্য গতকাল ফোন করে মমতাকে প্রস্তাব দেন কংগ্রেস সভানেত্রী। মমতা প্রস্তাব দেন বৈঠকের আলোচ্য বিষয় হোক করোনা পরিস্থিতিতে নিট এবং জেইই-র বিরোধিতা। সনিয়া সেই প্রস্তাব মেনে নেন। পাশাপাশি, জিএসটি বাবদ রাজ্যগুলির পাওনা বকেয়া নিয়েও আজকের বৈঠকে আলোচনা হয়।


এদিন, বৈঠকে পৌরোহিত্যের জন্য মমতাকে অনুরোধ করেন সনিয়া গাঁধী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির পাশে দাঁড়িয়েছে দিল্লির আম আদমি সরকার।