নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া পাঁচটি প্রস্তাবকে সমর্থন জানাল পাকিস্তান। অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলিও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে এর আগে করোনা আবহেও ভারতের বিরোধিতা করেছে পাকিস্তান। ফলে এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে পাকিস্তানের সমর্থন তাৎপর্যপূর্ণ।


গতকাল করোনা মোকাবিলায় সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই ওয়ার্কশপে পাকিস্তান ছাড়াও যোগ দেয় বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ ও সেশেলস। এই ওয়ার্কশপে মোদি বলেন, ‘ভারত থেকে আয়ুষ্মান ভারত ও জন আরোগ্য প্রকল্পের বিষয়ে সাহায্য নিতে পারে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের বন্ধুরা। এ বিষয়ে আমরা যদি সহযোগিতা করতে পারি, তাহলে অন্যান্য ক্ষেত্রেও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে পারি। অনেক বিষয়েই আমাদের একইরকম সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, সামাজিক ও লিঙ্গ বৈষম্যের মোকাবিলা করতে হয়। তবে একইসঙ্গে আমাদের শতাব্দীপ্রাচীন সংস্কৃতি এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের শক্তি আছে। যে বিষয়গুলির মাধ্যমে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, সেগুলির দিকে যদি নজর দিই, তাহলে আমাদের অঞ্চল শুধু এই অতিমারীই নয়, অন্যান্য অনেক চ্যালেঞ্জও অতিক্রম করতে পারবে। যদি একুশ শতককে এশিয়ার দেশগুলির করতে হয়, তাহলে সেটি দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রগুলির বোঝাপড়া ছাড়া সম্ভব নয়। আপনারা অতিমারীর সময় যে আঞ্চলিক সংহতির পরিচয় দিয়েছেন, তাতে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, এই ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব।’


এই ওয়ার্কশপে মোদি প্রস্তাব দিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে প্রয়োজনে চিকিৎসক ও নার্সরা দ্রুত অন্য দেশে যেতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ভিসার ব্যবস্থা করা হোক। এছাড়া জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের বিষয়ে চুক্তি করার জন্য সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীদের মধ্যে সহযোগিতার ব্যবস্থা করারও প্রস্তাব দিয়েছেন মোদি। তাঁর তৃতীয় প্রস্তাব হল, এই অঞ্চলের মানুষের উপর করোনার ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে একটি আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হোক। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের অতিমারীর মোকাবিলা করার জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যায়, তার জন্য আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলারও প্রস্তাব দিয়েছেন মোদি। তাঁর পঞ্চম তথা শেষ প্রস্তাব হল, করোনা ছাড়াও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি এবং প্রকল্পের বিষয়ে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত সার্ক গোষ্ঠীর দেশগুলির।


এই ওয়ার্কশপে যোগ দেওয়া সব দেশই মোদির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। সব দেশই জানিয়েছে, করোনা অতিমারী মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রয়োজন। পাকিস্তান ছাড়া অন্য সব প্রতিবেশী দেশকেই করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে সাহায্য করেছে ভারত। সেই দেশগুলি ভারত ও মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।