নয়াদিল্লি: রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর আক্রমণের মুখে চরম অস্বস্তিতে পড়ে এবার রায়ের ওই অংশ সংশোধনের জন্য আদালতে গেল মোদী সরকার। সূত্রের খবর, হলফনামায় বলা হয়েছে, ‘২৫ নম্বর প্যারাগ্রাফের দু’টি লাইনের সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হচ্ছে। এই দু’টি লাইনে ত্রুটি লক্ষ্য করা গিয়েছে। সম্ভবত, কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে খামবন্দী যে তথ্য জমা দিয়েছিল, তার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর জেরে জনসমাজে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাই আমরা বিচারের স্বার্থে এর সংশোধন চাইছি।’


রাফাল ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর শুক্রবার মোদী সরকার যখন চরম স্বস্তিতে, ঠিক সেই সময় প্রথম প্রশ্নটা তুলেছিলেন রাহুল। আর তারপরই চরম অস্বস্তিতে পড়ল মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, রাফাল যুদ্ধবিমানের দাম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ক্যাগকে দেওয়া হয়েছে। আর পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেছে। এরপরই আসরে নামেন রাহুল। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কেনাকাটার হিসাব দেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল-কে (সিএজি) দিতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে। বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে থাকা পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি-র(পিএসি) হাতে সেই রিপোর্টের একটি কপি এসে পৌঁছয়। যাতে কোন খাতে কত খরচ করছে সরকার, তার হিসাব থাকে বিরোধীদের কাছেও। কিন্তু, রাফালের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানেনি কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ, আদালতে জমা দেওয়া নথিতে তা মানা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।

রাহুলের এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি বলেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিটির কাছে ক্যাগের কোনও রিপোর্ট আসেনি। এরপরই বিরোধীরা এই অভিযোগে সরব হয়, যে রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মিথ্যা বলেছে মোদি সরকার। খোদ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান খাড়গে বলেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল ও ক্যাগকে ডেকে প্রশ্ন করবেন, যে কবে তারা পিএসির কাছে রাফাল রিপোর্ট জমা দিয়েছেন? এরপরেই রায়ের অংশ সংশোধনের জন্য আদালতে গেল সরকার।

কিন্তু, সরকারের সংশোধনীর আবেদন সত্ত্বেও, রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে নতুন করে তৈরি হওয়া এই আপাতত বিতর্ক থামার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। এরইমধ্যে শনিবার তামিলনাড়ুর বিজেপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, কংগ্রেসের কাছে জাতীয় নিরাপত্তা কিংবা প্রতিরক্ষার বিষয়টি হয়ত পাঞ্চিং ব্যাগের মতো কিংবা টাকা কামানোর মাধ্যম।