নয়াদিল্লি: দেশের অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়া নিয়ে নরেন্দ্র মোদির ২২ সেপ্টেম্বরের হিউস্টনের ‘হাউডি মোদি’ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন এর আগেও, ফের এ ব্যাপারে আজ ট্যুইট করলেন রাহুল গাঁধী। ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মোদির আমেরিকার ওই আগামী কর্মসূচিকে ‘মহা-আড়ম্বর’, ‘জাঁকজমকপূর্ণ’ বলেছেন, তা দিয়ে ‘আর্থিক বিপর্যয়ের বাস্তবতা আড়াল করা যাবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল।


অর্থনীতিতে হতাশার ছবি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করে কংগ্রেসও লাগাতার মোদি সরকারকে আক্রমণ করে চলেছে। অক্টোবরে পরের দিকে কেন্দ্রের অর্থনীতি চালানোর পদ্ধতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে প্রধান বিরোধী দল। ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে উত্পাদন হ্রাস ও কেনাবেচা কমার জেরে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার গত ২৫টি ত্রৈমাসিকে সবচেয়ে কমে ৫ শতাংশ হয়েছে চলতি অর্থবর্ষের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে। পরিস্থিতি সামলাতে আজ অর্থনীতি চাঙ্গা করার লক্ষ্যে কর্পোরেট কর হ্রাস সহ গত কয়েকদিন একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। চলতি অর্থবর্ষের মাঝখানেই শুক্রবার দেশীয় কোম্পানিগুলির জন্য কর্পোরেট কর কমিয়ে ২২ শতাংশ, নতুন ঘরোয়া ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্থাগুলির জন্য ১৫ শতাংশ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সব সেস, সারচার্জ যোগ করে এই করের হার দাঁড়াচ্ছে ২৫.১৭ শতাংশ। আরও কিছু কর সংক্রান্ত সুরাহাও ঘোষিত হয়েছ। কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হওয়ার তিন মাসেরও কম সময় পেরতেই এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নির্মলা। তিনি আরও ঘোষণা করেছেন, যেসব কোম্পানি বা ইক্যুইটি কেন্দ্রিক ব্যবসা করা সংস্থাকে সিকিউরিটিজ ট্রানজাকশন ট্যাক্স (এসটিটি) দিতে হয়, তাদের ইক্যুইটি শেয়ার বিক্রি থেকে পাওয়া মূলধনী লাভের ওপর ২০১৯ এর ফিন্যান্স অ্যাক্টে ঘোষিত বর্ধিত সারচার্জও দিতে হবে না।
রাহুল লিখেছেন, হাউডিইন্ডিয়ান ইকনমি জাঁকজমকে ভরা অনু্ষ্ঠানে শেয়ার বাজারের জন্য প্রধানমন্ত্রী কী-ই না করতে তৈরি, দেখে অবাক হচ্ছি। ১.৪ লক্ষ কোটি টাকায় হাউস্টনের অনুষ্ঠানটি বিশ্বের চিরকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘটনা হতে চলেছে। কিন্তু হাউডিমোদি ভারতকে যে আর্থিক বিপর্যয়ে ঠেলে দিয়েছে, তাকে কোনও ঘটনা দিয়েই আড়াল করা যাবে না।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অবশ্য কর্পোরেট কর ছাঁটাইয়ের ঘোষণাকে সংশয়ের সুরে স্বাগত জানিয়েও প্রচ্ছন্ন কটাক্ষ করেছেন। তিনি ট্যুইট করেছেন, একটা বাজেট পেশের তিন মাস না যেতেই, আরেকটা বাজেট পেশ হওয়ার ৪ মাস আগেই কর্পোরেট কর ছাঁটল আতঙ্কগ্রস্ত, হেডলাইনে জায়গা পাওয়ার মনোভাবে আচ্ছন্ন মোদি সরকার। এটা স্বাগত জানানোর মতো, কিন্তু এতে বিনিয়োগ চাঙ্গা হবে কিনা, সংশয় থাকছেই। ভারতের বণিক মহলের বুকে চেপে বসা ভয় কাটাতে এতে কিছুই হবে না।



প্রধানমন্ত্রী যখন ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ‘হাউডি মোদি’ কর্মসূচি পালন করতে চলেছেন, তখনই কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তাঁর কটাক্ষ, হাউডিমোদি অনুষ্ঠানের সময়টা মাথায় রেখেই অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা এল। প্রধানমন্ত্রী এখন বলতে পারবেন, কম ট্যাক্সের প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেক্সাসে এসেছি।