নয়াদিল্লি:  সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ব্যবস্থা কোনওমতেই মৌলিক অধিকার নয়। এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে সংরক্ষণ কার্যকর করতে তারা রাজ্যকে বলতে পারবে না। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, সরকারি চাকরিতে কোনও একটি বিশেষ শ্রেণির প্রতিনিধিত্বের হার অন্যদের তুলনায় কম এই যুক্তি পেশ করে তাতে সংরক্ষণ চালু করতে রাজ্যগুলিকে কোনও  বাধ্য করা যাবে না।
উত্তরাখণ্ড সরকারের পূর্ত দফতরে তফশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের (সিভিল) পদাধিকারীদের পদোন্নতি সংরক্ষিত করার আবেদন সংক্রান্ত একটি মামলায় এই রায় দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এধরনের দাবির কোনও ‘মৌলিক অধিকার’ নেই।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তর বেঞ্চ রায়ে বলেছে, রাজ্য সংরক্ষণ করতে বাধ্য নয়। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এমন কোনও মৌলিক অধিকার নেই যেখানে কেউ সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির সংরক্ষণের দাবি করতে পারেন। এমন কোনও মান্দামুস (উচ্চ আদালতের হুকুমনামা) জারি করা সম্ভব নয়, যেখানে রাজ্যের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে রাজ্যকে বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণ কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছিল উত্তরাখণ্ড উচ্চ আদালত। সেই সময় কপিল সিব্বল, দুষ্যন্ত দুবে সহ বহু বিশিষ্ট আইনজীবী সংরক্ষণের হয়ে জোরালো সওয়াল করতে গিয়ে বলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য সরকারের কর্তব্য তফশিলি জাতি ও উপজাতিকে সাহায্য করা।
উচ্চ আদালতের রায় খারিজ করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে, সংবিধানের বিভিন্ন ধারা সংরক্ষণের ক্ষমতা দিয়েছে, এটা ঠিকই। তবে, তা শুধুমাত্র সেই সব ক্ষেত্রে যদি সরকারি কাজে রাজ্যের মনে হয় কিছু বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব যথাযথভাবে হচ্ছে না।
সর্বোচ্চ আদালত তার রায়ে বলেছে, এটা আইন যে রাজ্যকে সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া যায় না। ঠিক একইভাবে, পদোন্নতিতে সংরক্ষণ জুড়তে বাধ্য নয় রাজ্য।
নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণে রাজ্যের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেও, একইসঙ্গে আদালত এ-ও জানিয়েছে, রাজ্যগুলিকে তাদের সিদ্ধান্তকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে। কারণ, সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা যেতেই পারে।