শ্রীনগর: সামনেই ঈদ। তার আগে কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দাদের উত্সব পালনে যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য বিধিনিষেধ হ্রাস করা হবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। আজ শুক্রবার কাশ্মীর উপত্যকার সব মসজিদে লোকজনকে প্রার্থনায় সামিল হওয়ার সুযোগ করে দিতে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে বলে জানাল প্রশাসন। তবে চিরাচরিত প্রথা অনুসারে নমাজের প্রার্থনার জন্য শ্রীনগরের ঐতিহাসিক জামা মসজিদে শুক্রবারের জমায়েত হবে না। তার দরজা আজও বন্ধ রয়েছে। জনৈক নিরাপত্তা অফিসার বলেছেন, শুক্রবারের প্রার্থনায় মসজিদে মসজিদে জমায়েত থেকে আচমকা প্রবল বিক্ষোভের আশঙ্কা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শুক্রবারের প্রার্থনায় কোনও বাধা-বিঘ্ন, অশান্তি না হলে বিধিনিষেধ আরও তুলে নেওয়া হবে জানিয়েছেন সরকারি কর্তারা। গতকাল রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ঈদ ও শুক্রবারের নমাজ উপলক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা ঢিলেঢালা করার ইঙ্গিত দেন।
সূত্রের বক্তব্য, কোনও কাশ্মীরিদের যাতে হেনস্থা, হয়রানির মুখে পড়তে না হয়, সেজন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতা অজিত ডোভাল। সেকথা মাথায় রেখেই কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধ আলগা করার কথা ভেবেছে। ডোভাল জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ হওয়ার পর গত বুধবার কাশ্মীরের সোপিয়ান সফরে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে অভয় দেন, তাঁদের সঙ্গে রাস্তায় একসঙ্গে খান। সরকারি কর্তারা ব্যাখ্যা করেছেন, বাসিন্দারা যার যার নিজের এলাকার মসজিদে গিয়ে প্রার্থনায় সামিল হবেন।
রাজ্য পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিংহ বলেছেন, লোকজনকে নিজের নিজের এলাকায় বেরতেই পারেন, তাতে কোনও বাধা নেই। তবে এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। গতকালও শ্রীনগরের সিভিল লাইনস এরিয়া, ডাল লেকে লোকজনের অবাধ আসা যাওয়ার জন্য বিধিনিষেধ উঠেছিল।
একটি সূত্রের খবর, পাঁচদিন বিধিনিষেধ বহাল থাকার পর আজ সকালে ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবাও আংশিক চালু হয়। লোকজন ঘরের বাইরে বেরন। যদিও যে কোনও অশান্তি, হিংসা, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক পুলিশ, প্রশাসন, নিরাপত্তারক্ষীরা। কয়েক হাজার নিরাপত্তাকর্মীকে প্রহরায় বহাল রাখা হয়েছে। শ্রীনগরে প্রতি ১০০ মিটার অন্তর রয়েছে ব্যারিকেড। জরুরি চিকিত্সার প্রয়োজনেই লোকজন এলাকার বাইরে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন।
দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি সহ প্রায় ৪০০ রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এখনও বন্দি।