নয়াদিল্লি: ১৬ বছর আগের হরিয়ানায় সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাবাস হল ডেরা সাচ্চা সৌদা প্রধান বাবা গুরমিত রাম রহিমের। ২০০২-এর এই সাংবাদিক হত্যা মামলায় গত শুক্রবার ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ও ১২০ বি (ফৌজদারি ষড়যন্ত্র) ধারায় দোষী ঘোষিত হন মূল অভিযুক্ত রাম রহিম, কুলদীপ সিংহ, নির্মল সিংহ ও কৃষ্ণ লাল নামে আরও তিনজন। ডেরা প্রতিষ্ঠাতার পাশাপাশি ওই তিনজনেরও আজীবন জেল হয়েছে। এছাড়া, প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও হয়েছে।
রাম রহিম ইতিমধ্যেই দুই মহিলা ভক্তের ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০ বছরের কারাবাসের সাজা খাটছেন। তিনি আছেন রোহতকের সুনারিয়া জেলে। সেখান থেকেই আজ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সাজা শোনানো হয় তাঁকে। বাকিরা আম্বালার জেল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সাজা ঘোষণার শুনানিতে হাজির হয়।
আজকের পঞ্চকুল্লার বিশেষ সিবিআই আদালতে রাম রহিমের সাজা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অশান্তির আশঙ্কায় সকাল থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল পঞ্জাব, হরিয়ানার বিস্তীর্ণ এলাকাকে। পঞ্চকুল্লার আদালত চত্বর ও আশপাশে কড়া নজরদারি চালু হয়। হরিয়ানায় সিরসায়ও আগেভাগে যাবতীয় নিরাপত্তার আয়োজন ছিল। সেখানেই ডেরার সদর দপ্তর। ২০১৭-র আগস্টে শিষ্যা ধর্ষণ মামলায় ডেরা প্রধান দোষী ঘোষিত হওয়ার পর হরিয়ানার পঞ্চকুল্লা, সিরসায় তাঁর সমর্থকদের ব্যাপক তাণ্ডব, হিংসায় ৪০ জনের বেশি প্রাণহানি, বহু মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা মনে রেখেই প্রস্তুতি নেয় প্রশাসন।
সিরসায় ডেরা দপ্তরে সেখানকার শিষ্যাদের ওপর গডম্যান রাম রহিমের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির একটি চিঠি ছাপা হয়েছিল ছত্রপতির সংবাদপত্রে। তারপরই ২০০২ এর অক্টোবরে একদিন খুন হন তিনি। এ ঘটনায় প্রধান চক্রী হিসাবে অভিযুক্ত হন রাম রহিম। ২০০৩-এ ছত্রপতির পরিবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালতে মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন করে। মামলার তদন্ত ভার পায় সিবিআই। তারা ২০০৭ এর জুলাইয়ে চার্জশিট পেশ করে। তাতে বলা হয়, ছত্রপতিকে মারার জন্য রাম রহিমের সামনেই দুই শ্যুটার কুলদীপ সিংহ, নির্মল সিংহকে নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলভার, একটি ওয়াকিটকি দিয়েছিলেন ডেরা ম্যানেজার কৃষ্ণলাল।