নয়াদিল্লি: উন্নাও ধর্ষণ মামলায় বড়সড় ধাক্কা খেল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এ সংক্রান্ত পাঁচটি মামলাই দিল্লিতে সরানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সমস্ত মামলার শুনানিই একটি আদালতে হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রায়বরেলির দুর্ঘটনার তদন্ত এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে তদন্তকারী আধিকারিক আরও এক সপ্তাহ সময় চাইতে পারেন। মামলা শুরু করার ৪৫ দিনের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। অভিযুক্তরা চাইলে এই নির্দেশ সম্পর্কে আপত্তি বা সংশোধনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন।


নির্যাতিতাকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। উত্তরপ্রদেশ সরকার ওই অর্থ দেবে। নির্যাতিতার মাকে সিআরপিএফ নিরাপত্তা দেবে বলেও জানিয়েছে আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। সলিসিটার জেনারেল বলেন, তাঁদের স্থানান্তরিত করা সম্ভব। পরিবার চাইলে উন্নত চিকিত্সার জন্য স্থানান্তরিত করা যাবে।সুপ্রিম কোর্ট পরিবারের কাছে এ ব্যাপারে মতামত জানার নির্দেশও দিয়েছে।

এর আগে শুনানির শুরুতেই উন্নাও ধর্ষণ সংক্রান্ত সমস্ত মামলা দিল্লিতে সরানোর  ইচ্ছাপ্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। মামলার নথি নিয়ে সিবিআই আধিকারিকদের আসতে নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের।বেলা ১২টার মধ্যে মামলার স্টেটাস রিপোর্ট চায় সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে রায়বরেলিতে যে পথ দুর্ঘটনায় নির্যাতিতা জখম হয়েছেন, সেই ব্যাপারে তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় রিপোর্ট তলব করে সুপ্রিম কোর্ট। গত রবিবার রায়বরেলিতে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান নির্যাতিতার কাকিমা ও কাকিমার বোন। গুরুতর জখম অবস্থায় লখনউয়ের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন নির্যাতিতা ও তাঁর আইনজীবী।

এই ঘটনা ঘিরে দেশজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার করে। দুর্ঘটনা নিয়ে গত ২৯ জুলাইয়ে দায়ের করা এফআইআরে ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী রণবেন্দ্র প্রতাপ সিংহ-র জামাই অরুণ সিংহর নাম রাখা হয়।

সিবিআই দুর্ঘটনার মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে।

গতকালই উন্নাওয়ের নির্যাতিতার তাঁকে লেখা চিঠি পেতে দেরি হওয়ার কারণ  গতকাল জানতে চান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।এ ব্যাপারে আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছেন তিনি।
মামলা তোলার জন্য অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার চাপ দিচ্ছেন বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছিল। তরুণীর পরিবার সূত্রে খবর, গত একবছরে মুখ্যমন্ত্রী, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্র সচিব, সিবিআই, ডিজিপি, উন্নাওয়ের জেলাশাসক ও এসপি-কে মোট ৩৩টি চিঠি লিখেছিলেন নির্যাতিতা। কারও কাছ থেকে কোনও সাড়া মেলেনি।
উল্লেখ্য, তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেঙ্গারমউয়ের চার বারের বিধায়ক সেঙ্গারকে ২০১৮-তে গ্রেফতার করা হয়।