নয়াদিল্লি: ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়, সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চেয়ে পেশ হওয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের ২০১৮-র ওই রায়ের পুনর্বিচার চেয়ে যে একগুচ্ছ পিটিশন জমা পড়েছে, আগামীকাল সে ব্যাপারে রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল ও বিচারপতি কে এম জোসেফের বেঞ্চ রায় দেবে।


সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে রাফাল ডিলের তদন্তের দাবিতে যেসব পিটিশন দায়ের হয়েছিল, গত ১৪ ডিসেম্বর সেগুলি খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালত। ওই ডিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয়, সন্দেহ করার মতো কিছু ঘটেনি বলে অভিমত জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এছাড়া যুদ্ধবিমানের মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি খতিয়ে দেখা তাদের কাজ নয় বলেও জানায় সর্বোচ্চ আদালত। তারপরই ওই রায়ের বিরুদ্ধে ও সেটি রিভিউ করার দাবিতে পিটিশন পেশ করেন দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ও আরও কয়েকজন। তাঁরা ৫৮০০০ কোটি টাকার ডিলের তদন্ত ও এফআইআর দায়ের করার দাবি করেছেন।

তাঁদের রিভিউ পিটিশনে বলা হয়েছে, শীর্ষ আদালতের ১৪ ডিসেম্বরের রায়ে একাধিক ত্রুটি আছে, রায়ে মূলত নির্ভর করা হয়েছে আদালতে পেশ করা মুখবন্ধ করা খামে কারও সই না করা একটি নোটে সরকারের দেওয়া ভুল তথ্যের ওপর। এতে স্বাভাবিক ন্যয়বিচার প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি পিটিশনারদের।
পাশাপাশি তাঁদের আরও অভিযোগ, ২০১৫-র ১০ এপ্রিল ৩৬টি রাফাল জেটবিমান সংগ্রহের চুক্তিতে সই করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যদিও এর কোনও দরকার আছে বলে জানায়নি বায়ুসেনা দপ্তর এবং ডিফেন্স অ্যাকিউজিশন কাউন্সিলের (ডিএসি) সম্মতিও নেওয়া হয়নি, যা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও জিনিসপত্র সংগ্রহের প্রথম ধাপ হিসাবে স্বীকৃত।
কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে রিভিউ পিটিশনগুলি খারিজের দাবি জানায়। রাফালে ডিল সংক্রান্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রকের কিছু অভ্যন্তরীণ গোপন নথি মিডিয়ার একাংশে বেরনোর পর কেন্দ্র্র হলফনামায় দাবি করে, পিটিশনাররা নিজেদের দাবি পোক্ত করতে ‘অন্যায় ভাবে’ ওইসব নথি জোগাড় করেছেন। কেন্দ্র আরও সওয়াল করে, পিটিশনারদের পেশ করা নথিপত্রগুলি দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলি যুদ্ধবিমানের লড়াই করা শক্তি কতটা, সেই সংক্রান্ত।
গত মে মাসে পিটিশনারদের আবেদনের ওপর রায়দান স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট।