কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: নিউ নর্মালে আগামিকাল, শুক্রবার থেকে খুলছে স্কুল। এরই মধ্যে রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামেরা। ফলে দীর্ঘদিন পর স্কুলে যাওয়ার আনন্দর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যানবাহন নিয়ে আশঙ্কা। প্রস্তুত আছে সরকার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামিকাল থেকেই খুলবে স্কুল, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।


 


গমগমে ক্লাসরুম। সহপাঠীদের সঙ্গে খুনসুটি। টিফিন খাওয়া। করোনা আবহে দীর্ঘদিন উধাও এই ছবি। সেই ছবি পুরোপুরি না ফিরলেও ১১ মাস পর শুক্রবার তালা খুলছে সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ও বেসরকারি অধিকাংশ স্কুলের। ক্লাসে ফিরছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৪০ লক্ষ পড়ুয়া।


 


কিন্তু একে করোনা, তার ওপর শুক্রবার বামেদের ধর্মঘট। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সঙ্কট। শিক্ষামন্ত্রী  জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই খুলবে স্কুল। সবরকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আগামীকাল থেকে স্কুল খুলছে ৷ সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে, কোভিড বিধি কঠোরভাবে পালন করতে হবে ৷ এর অন্যথা করা যাবে না ৷ সরকার সব কিছু নিয়ে প্রস্তুত আছে ৷’’


 


স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্কুলে ঢোকার সময় পড়ুয়াদের দূরত্ববিধি মানতে হবে। ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজার। সবাইকে পরতে হবে মাস্ক। ক্লাসরুমে সব সময় দূরত্ববিধি মানতে হবে পড়ুয়াদের। সহপাঠীর টিফিন বা জল খাওয়া যাবে না। সহপাঠীর বই, ব্যাগ বা অন্য জিনিসপত্র ছোঁয়া যাবে না। স্কুল চত্বরে জড়ো হওয়া যাবে না। স্কুলে ঢুকতে পারবেন না অভিভাবকরা।


 


সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছে, একটি ক্লাসের পড়ুয়াদের দুই বা তার বেশি ঘরে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কলকাতার এক নামী স্কুলের শিক্ষিকার কথায়, ‘‘অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রিন্সিপালও বলেছেন, এক সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের বসানো হবে না৷’’


 


সরকার নির্দেশিকা দিলেও তা মানার মতো পরিকাঠামো সব স্কুলের আছে কি? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিতর্ক বেঁধেছে অভিভাবকদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি স্কুলের মুচলেকা নেওয়া নিয়ে। যেখানে বলা হয়েছে, পড়ুয়ার করোনা হলে বা তার উপসর্গ দেখা দিলে তার দায়বদ্ধতা স্কুলের নয়। জুন মাসে ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক। যারা মাধ্যমিক দেবে, তাদের স্কুলে ক্লাস হয়েছে আড়াই মাস। যারা উচ্চমাধ্যমিক দেবে, তাদের সশরীরে একদিনও ক্লাস হয়নি। এই পরিস্থিতিতে শেষমেষ স্কুল খুলছে। নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে পড়ুয়ারা।