নয়াদিল্লি: প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শঙ্করাচার্য জয়ন্তী পালন করা হয়। আজ সেই বিশেষ দিন। দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে আদি শঙ্করাচার্যর জন্মজয়ন্তী। ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মীয় গুরু ও দার্শনিক আদি শঙ্করাচার্য। তাঁর অনুরাগীদের কাছে আজকের দিনটির বিশেষ গুরুত্ব আছে।


কেরলের কালাদি নামে একটি গ্রামে জন্ম হয় আদি শঙ্করাচার্যর। তাঁর বাবা-মা ছিলেন নাম্বুদিরি ব্রাহ্মণ। তাঁরা দু’জনই ইষ্টদেবতা শিবের নামে সন্তানের নাম রাখেন শঙ্কর। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, শিবই আদি শঙ্কর রূপে মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।

ছোটবেলা থেকেই আদি শঙ্করাচার্য তপস্বীর মতো জীবনযাপন করতেন। তবে তাঁর মা কিছুতেই চাইতেন না তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করুন। তবে আদি শঙ্করাচার্য তাতে নিজের পথ থেকে সরে যাননি। তিনি উপযুক্ত মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলেন। একদিন যখন তিনি বাড়ির কাছেই নদীতে স্নান করছিলেন, একটি কুমীর তাঁর পায়ে কামড় দেয়। তিনি সন্ন্যাস গ্রহণের বিষয়ে মায়ের সম্মতি আদায়ের জন্য এই মুহূর্তটিকেই বেছে নেন। কুমীর যখন তাঁর পা কামড়ে রয়েছে, তখন তিনি মাকে বলেন, তাঁর সন্ন্যাস গ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানাতে হবে। সেই সময় তাঁর মা বুঝতে পারেন, সন্তান সাধারণ ছেলে না, আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী। এরপরেই তিনি ছেলেকে সন্ন্যাস গ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানান।

আদি শঙ্করাচার্য সারা দেশ ঘুরে সনাতন ধর্মের পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করেন। তিনি অদ্বৈত বেদান্ত দর্শন ফের প্রচার করেন। এই দর্শন অতীতে ‘পুরুষবেদ’ নামে পরিচিত ছিল। অদ্বৈত বেদান্ত দর্শন অনুসারে, ব্রাহ্মণের সঙ্গে আত্মার কোনও পার্থক্য নেই। সর্বোত্তম শক্তিই আমাদের পরিচালনা করছে। বিদ্যার মাধ্যমে মোক্ষলাভই উদ্দেশ্য।

মাত্র ৩২ বছর বয়সে প্রয়াত হন আদি শঙ্করাচার্য। তবে তাঁর দর্শন ও শিক্ষা আজও বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।