উমপুন, নিসর্গের ফলে এবার আগেই এসে গিয়েছে বর্ষা, কৃষিক্ষেত্রে ফলন ভাল হওয়ার আশা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 08 Jul 2020 07:30 PM (IST)
ঘূর্ণিঝড় উমপুন ও নিসর্গ পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে তাণ্ডবলীলা চালিয়ে প্রচুর ক্ষতি করলেও, এর ফলে মে থেকে জুন মাসের শুরুর দিক পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অংশে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে।
নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জেরে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। টানা লকডাউনের জেরে ভারতীয় অর্থনীতিও মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। অনেকে মনে করছেন, স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে চলেছে ভারত। তবে এরই মধ্যে আশার আলো দেখাচ্ছে কৃষিক্ষেত্র। গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে ভাল ফলন হওয়ার আশা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বছর বর্ষা আসার আগেই মে মাস থেকে শুরু হয় বৃষ্টি। এরপর সারা দেশেই ঠিক সময়ে এসেছে বর্ষা। ফলে এই সময়ে যে ফসলগুলি হয়, তার সবগুলিরই ফলন ভাল হবে বলে আশা তৈরি হয়েছে। ১ জুলাই পর্যন্ত দেশে বর্ষার মরসুমের প্রধান পাঁচটি ফসলের মধ্যে চারটি ফসলেরই বীজ বপন করার অঞ্চল গত পাঁচ বছরে গড়ে ২৭ শতাংশ থেকে ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার জলাধারগুলিতে দ্বিগুণ জল রয়েছে। তারই সঙ্গে ভাল বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় এবার ভাল ফলনের আশা রয়েছে। ভারতের মোট কর্মী সংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। দেশের আর্থিক ক্ষেত্রে কৃষির অবদান প্রায় ১৬ শতাংশ। এবার করোনার জেরে যখন গ্রামীণ অর্থনীতি চরম সমস্যায়, তখন বাড়তি ফলন স্বস্তি দিতে পারে। ঘূর্ণিঝড় উমপুন ও নিসর্গ পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের কয়েকটি রাজ্যে তাণ্ডবলীলা চালিয়ে প্রচুর ক্ষতি করলেও, এর ফলে মে থেকে জুন মাসের শুরুর দিক পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অংশে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ধান, বাজরা, ডাল, তৈলবীজ, তুলোর ফলন এবার ভাল হওয়ার আশা দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, দেশের সব জায়গায় ভাল বৃষ্টি হচ্ছে। ১ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত দেশের ২৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে স্বাভাবিক বা স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। গত বছর কেরল, কর্ণাটক, বিহার ও উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা হলেও, দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ কম ছিল। এবার সেরকম পরিস্থিতি না থাকায় জলাধারগুলিতে ঘাটতি নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার কৃষিকাজ ভাল হওয়ার একটা কারণ হল লকডাউন। দেশের সর্বত্র জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে কার্যকলাপ লকডাউনের সময় বন্ধ থাকলেও, কৃষিতে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের গ্রাম বা শহরে ফিরে যাওয়ায় কৃষিক্ষেত্রে শ্রমিকের অভাবও হয়নি।