কাবুল: আফগানিস্তান দখলের পর কি এবার কাশ্মীরেও নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে তালিবান? পাকিস্তান ও চিন প্রকাশ্যেই তালিবানকে সমর্থন করায় ভারতের জন্য এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, কাশ্মীরের দিকে নজর নেই তালিবানের। তাদের মতে, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়। ফলে আশা করা হচ্ছে কাশ্মীরের দিকে নজর দেবে না তালিবান।


এএনআই সূত্রে আরও খবর, আফগানিস্তান বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কাশ্মীরে নজরদারি বাড়াতে চলেছে ভারতীয় সেনা। কাশ্মীরে নিরাপত্তার উপরেও আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি আফগানিস্তানে থাকলেও, বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভারতে হামলা চালানোর মতো ক্ষমতা তাদের নেই।


দু’দশক পর মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তান থেকে ফিরতেই ফের জাঁকিয়ে বসেছে তালিবান। যার জেরে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতও প্রবল চাপের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ১৯৯৬ সালে যখন তালিবান আফগানিস্তানের তখতে বসেছিল, তখন তাদের পাশে ছিল শুধু পাকিস্তান। কিন্তু, এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। পাকিস্তানের পাশাপাশি চিন, রাশিয়ার মতো মহাশক্তিধর দেশ এবং ইরান, তুরস্কও তালিবানের প্রতি নরম। কারণ, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে শত্রুর শত্রু, আমার বন্ধু। এখন স্বাভাবিকভাবেই চিন, রাশিয়া, ইরান, তুরস্কের মতো দেশ তালিবানের দিকে চলে যাওয়ায় একদিকে তাদের শক্তি যেমন বাড়বে, অন্যদিকে তেমন আন্তর্জাতিক মহলে ভারত পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়তে পারে।


পাশাপাশি আফগানিস্তান তালিবানের কব্জায় চলে যাওয়ার ফলে কাশ্মীরের ওপর ঘনাচ্ছে উদ্বেগের মেঘ। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তালিবানের সঙ্গে জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি সংগঠনের যোগ অত্যন্ত পরিষ্কার। আর এই দু’টি জঙ্গি সংগঠনেরই টার্গেট কাশ্মীর। তাহলে এবার কি তালিবানের সাহায্য নিয়ে মাসুদ আজহার এবং হাফিজ সঈদের জঙ্গি সংগঠন কাশ্মীরে নতুন করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করতে পারে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালিবান মূলত দু’ভাবে রিক্রুট করে। একটা অংশ ভাড়াটে জঙ্গি। আরেকটা অংশ ধর্মীয় কট্টরপন্থী। ১৯৯৬ সালে তালিবান আফগানিস্তানের তখতে বসার পর কাশ্মীরে ভাড়াটে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেছিল। এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। 


তবে সূত্রের খবর, তালিবান ইতিমধ্যে দাবি করেছে কাশ্মীরকে তারা দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলে মনে করে। কাশ্মীর নিয়ে তাদের কোনও ভাবনা নেই বলে দাবি করেছে তালিবান। যদিও, নয়াদিল্লি কাশ্মীরের নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না। সূত্রের খবর, কাশ্মীরের নিরাপত্তা অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। নয়াদিল্লি মনে করছে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আফগানিস্তানে থাকা পাক-জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি এই পরিস্থিতির কোনও সুযোগ নিতে পারবে না।