পুলিশ বলেছে, বাটাগুন্ডের বাসিন্দারা সন্ত্রাসবাদীদের পিছু নিয়ে কাতর আর্জি জানান ওদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করে উল্টে গ্রামবাসীদের ভয় দেখাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে। সন্ত্রাসবাদীরা ওদের একটি নদীর ওপারে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
সন্ত্রাসবাদীরা সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দেয়, প্রাণের মায়া থাকলে চাকরি ছাড়ো, নয়তো মরতে হবে। সেই হুমকিই তারা কার্যকর করল বলে এ ঘটনা থেকে মনে হচ্ছে। তিনজনের হত্যার মর্মান্তিক খবর শুনে দুজন পুলিশকর্মী আতঙ্কে ভিডিও প্রকাশ করে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সোস্যাল মিডিয়ায় বেরনো ভিডিওতে তাঁদের একজনকে বলতে শোনা গিয়েছে, আমার নাম ইরশাদ আহমেদ বাবা। পুলিশ কনস্টেবল। আমি ইস্তফা দিয়েছি। তাজাল্লা হুসেন লোন নামে এক এসপিও বলেছেন, ১৭ সেপ্টেম্বরই তিনি চাকরি ছেড়েছেন, ভিডিও বের করে খবরটা পাকা করছেন। যদিও পুলিশ কর্তারা এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেননি, বলেছেন, খবরটা খতিয়ে দেখতে হবে।
পুলিশের জনৈক মুখপাত্র বলেন, বর্বরোচিত সন্ত্রাসে আমাদের তিন সাহসী সহকর্মীকে হারালাম। ওঁদের শ্রদ্ধা জানাই। এই অমানবিক আচরণের তীব্র নিন্দা করছি, আশ্বাস দিচ্ছি, অপরাধীরা আইনানুযায়ী শাস্তি পাবে।
তিন পুলিশকর্মী হত্যার দায় স্বীকার করা হয়েছে একটি ট্যুইটার হ্যান্ডলে। সম্ভবত, সেটি জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলিরও পুলিশকর্মী খুনে হিজবুলই জড়িত বলে অভিমত।
হিজবুল কমান্ডার রিয়াজ নাইকু সম্প্রতি বেশ কয়েকবার এসপিও সহ পুলিশকর্মীদের বাহিনী ছাড়ার নির্দেশ দেয়। তার দাবি, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকর্মীদের ব্যবহার করছে সরকার।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ট্যুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবি করেছেন, কেন্দ্রের পেশীর জোর দেখানোর নীতিতে ফল মিলছে না, কেননা পুলিশকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের অপহরণ হয়েই চলেছে। তাঁর মত, আলোচনাই একমাত্র রাস্তা, যা এখন সূদূর স্বপ্ন বলে মনে হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ আগস্ট সন্ত্রাসবাদীরা দক্ষিণ কাশ্মীরের নানা এলাকা থেকে পুলিশকর্মীদের অন্তত ৮ আত্মীয়কে অপহরণ করে। পরে তাদের ছেড়ে দেয়। সেবারও নাইকু দাবি করেছিল, এটা তাদের কাজ।