আগরতলা: বিয়ে হয় ১৫ বছর বয়সে। এরপর সন্তানেরও জন্ম দিয়েছেন। ছেলের বয়স আড়াই বছর। কিন্তু তারপরেও পড়াশোনা ছাড়েননি। ছেলেকে দেখাশোনা করা, সংসারের যাবতীয় কাজ সামলেও পড়া চালিয়ে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ত্রিপুরার দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় চমকপ্রদ ফল করেছেন ১৯ বছরের সঙ্ঘমিত্রা দেব। কলা বিভাগের এই ছাত্রী ৯২.৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। তিনি সব বিভাগের মধ্যে নবম স্থান অর্জন করেছেন। কলা বিভাগে তাঁর স্থান সপ্তম।


ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ১০ কিমি দূরে গাঁধীগ্রাম শহরে সঙ্ঘমিত্রার শ্বশুরবাড়ি। তাঁর স্বামী রাজু ঘোষ বিএসএফ জওয়ান। তিনি কাশ্মীরে মোতায়েন। সঙ্ঘমিত্রা জানিয়েছেন, ‘আমি ছেলের যত্ন নেওয়া এবং বাড়ির সব কাজ সামলেই পড়াশোনা করার সময় বের করে নিয়েছি। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাহায্য করেছেন। আমার যা ফল হয়েছে, তাতে আমি খুশি। আমি এভাবেই স্নাতক স্তরেও পড়াশোনা করতে চাই।’

সঙ্ঘমিত্রা যে বছর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দেন, সেবারই তাঁর বিয়ে হয়। সেই পরীক্ষায় তিনি ৭৭ শতাংশ নম্বর পান। তবে তিনি দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় ভাল ফল করলেও, নাবালিকা বিবাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ত্রিপুরার একটি সংস্থা। জাতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার বিষয়ক জরিপ অনুযায়ী, নাবালিকা বিবাহে সারা দেশে দ্বিতীয় স্থানে ত্রিপুরা। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে ২১.৬ শতাংশ নাবালিকা বিবাহ হয়। যে মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে, তাদের বয়স ১৫ থেকে ১৯ বছর। ত্রিপুরার গ্রামাঞ্চলেই নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জাতীয় স্তরে যেখানে নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা গড়ে ১১.৯ শতাংশ, সেখানে ত্রিপুরার পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে উদ্বেগের।