নয়াদিল্লি: ৩৪ বছর পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে সবুজ সঙ্কেত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের বদলে শিক্ষামন্ত্রক ফেরাচ্ছে মোদি সরকার। নয়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী, এখন কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ও অষ্টম এবং তার পরে সম্ভব হলে স্থানীয় ও মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নয়া শিক্ষানীতিতে স্কুল শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বড়সড় বদল আনা হয়েছে।
স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন হচ্ছে-
কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ও অষ্টম এবং তার পরে সম্ভব বলে স্থানীয় ও মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, কলেজের মতো স্কুলেও থাকছে অপশনাল বিষয়। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সংস্কৃত থাকবে ঐচ্ছিক বিষয়। পড়ুয়াদের পড়তে হবে তিনটি করে ভাষা। তবে কোনও ভাষা তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না।
বর্তমানে স্কুলশিক্ষা ১০+২ হিসেবে চলে। কিন্তু এখন ৫+৩+৩+৪ মডেলে হবে স্কুল শিক্ষা। আলাদা করে অঙ্গনওয়াড়ি ও আইসিডিএস থাকছে না। স্কুল জীবনের প্রথম ৫ বছরে থাকছে ৩ বছরের প্রিস্কুল বা অঙ্গনওয়াড়ি, সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি। পরের ৩ বছর তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি।
পরবর্তী ৩ বছর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি। এবং শেষের ৪ বছরে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি।
দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হবে। কিন্তু এতে বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী,তৃতীয়, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা থাকবে। সেই পরীক্ষা নেবে স্কুল। নতুন ব্যবস্থায় পড়ুয়ারা নিজের ইচ্ছের ভিত্তিতে বিষয় বেছে নিতে পারবে। অর্থাত্, কোনও ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গীতও পড়তে চাইলে সেই বিকল্প থাকবে। ভোকেশনাল পাঠক্রম ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই শুরু হবে।
দক্ষতার ওপর গুরুত্ব-
বোর্ডের পরীক্ষা হবে অর্জিত জ্ঞানভিত্তিক। এতে মুখস্থ বিদ্যার অভ্যেস কম করা হবে। কোনও পড়ুয়া যখন স্কুল থেকে বের হবে, তখন স্থির করা হবে যে, সে কোনও দক্ষতা নিয়েই স্কুল শিক্ষা শেষ করেছে।
পড়ুয়া স্কুল শিক্ষার সময় নিজের রিপোর্ট কার্ড তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে। এখনও পর্যন্ত রিপোর্ট কার্ড তৈরি করেন শিক্ষকরা। কিন্তু নয়া শিক্ষানীতিতে তিনটি ভাগ থাকবে। প্রথম পড়ুয়া নিজের মূল্যায়ন করবে, দ্বিতীয় ধাপে করবে সহপাঠীরা। তৃতীয় পর্যায়ে মূল্যায়ন করবেন অধ্যাপকরা।
স্নাতক কোর্স
প্রথম বছরে সার্টিফিকেট
দ্বিতীয় বছকে ডিপ্লোমা
তৃতীয় বছরে ডিগ্রি
কলেজে এখন ডিগ্রি ৩ ও ৪ বছরের হবে। ৩ বছর পর ডিগ্রি সেই পড়ুয়াদের জন্য, যারা উচ্চশিক্ষা আর নেবে না। উচ্চশিক্ষার জন্য পড়ুয়াদের চার বছরের ডিগ্রি করতে হবে। তাদের জন্য এমএ এক বছরে করার সংস্থান থাকবে।
এখন পড়ুয়াদের এমফিল করতে হবে না। এমএ-র পড়ুয়া সরাসরি পিএইচডি করতে পারবেন।
নতুন শিক্ষা নীতিতে বেসরকারি, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম এক হবে। এখন কোনও ডিমড ইউনিভার্সিটি ও সরকারি ইউনিভার্সিটির নিয়ম ভিন্ন হবে না। নয়া নীতিতে স্কুল ও উচ্চশিক্ষায় বহুভাষাবাদের ক্ষেত্রে উত্সাহ দেওয়া হবে।
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছে, সকলের জন্য শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করাই লক্ষ্য। ২০২৫ সালের মধ্যে সকলের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত।