নয়াদিল্লি: রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেলের ইস্তফা নিয়ে মোদী সরকারকে একযোগে তোপ দাগল বিরোধী দলগুলি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার সূচনা হল। কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটে আবার দাবি করেছেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এটি ভারতের আর্থিক ও ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার কলঙ্ক। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের দাবি, কোনও আত্মসম্মানবিশিষ্ট শিক্ষিত ব্যক্তির পক্ষে এনডিএ সরকারের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।



কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে সংঘাত চলার পর আজ ইস্তফা দিয়েছেন উর্জিত। তিনি বিদায়ী বিবৃতিতে সরকারের কোনও ব্যক্তি বা মন্ত্রকের নাম উল্লেখ করেননি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েই ইস্তফা দিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানার পর ট্যুইট করে মমতা বলেছেন, ‘এর আগে কোনওদিন এই ঘটনা ঘটেনি। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা গভীরভাবে বিচলিত। মানুষের অর্থের জামিনদার হল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সব প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এটা অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা। বিজেপি একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। সর্বত্র রাজনৈতিক জরুরি অবস্থা চালু করা হয়েছে। সব রাজনৈতিক দলকে হুমকি দিচ্ছে বিজেপি। অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। যদি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে সেটা দেশের পক্ষে অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থাও চালু হয়েছে।’



কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হওয়াতেই সরে গেলেন উর্জিত। আহমেদ পটেল বলেছেন, ‘যে পদ্ধতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হল, সেটা ভারতের আর্থিক ও ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার কলঙ্ক। বিজেপি সরকার কার্যত আর্থিক জরুরি অবস্থা চালু করেছে। দেশের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে।’

চিদম্বরম ট্যুইট করে বলেছেন, ‘ড. উর্জিত পটেলের ইস্তফায় আমি দুঃখিত, তবে অবাক হইনি। কোনও শিক্ষিত ও আত্মসম্মানবিশিষ্ট ব্যক্তি এনডিএ সরকারে কাজ করতে পারবেন না। ড. পটেল হয়তো ভেবেছিলেন সরকার পদক্ষেপ বদল করতে পারে। কিন্তু আমি জানতাম সেটা হবে না। আরও একটি বৈঠকে আত্মসম্মান খোয়ানোর আগেই ইস্তফা দিয়ে ভাল করেছেন ড. পটেল।’