নয়াদিল্লি: অটলবিহারী বাজপেয়ী সত্যিই বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন বলে অভিমত জানাল বাম দলগুলি। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দর্শনের কট্টর বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও তারা বলছে, সরকার চালানোর সময় বাজপেয়ী সবসময় আলোচনার দরজা খোলা রাখতেন, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিরোধীদের মতামত নিতেন।

সিপিআই নেতা ডি রাজার বক্তব্য, আমেরিকা যখন ইরাকে হামলা করে ভারতকে কোয়ালিশন বাহিনীতে সামিল হতে বলে, বাজপেয়ী তখন সর্বদল বৈঠক ডাকেন, সিপিআই নেতা এ বি বর্ধন ও সিপিএম নেতা হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের সঙ্গে আলোচনা করেন। বাম নেতারা ভারতের আমেরিকাকে সমর্থন করা চলবে না বলে জানালে তিনি ওঁদের বলেন, বাইরে গিয়ে কথাটা বলুন, অর্থাত্ রাস্তায় নেমে আমেরিকার বিরুদ্ধে মুখ খুলুন বামেরা। পরদিন সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করে জানিয়ে দেওয়া হয়, ভারত আমেরিকার বাহিনীতে সামিল হবে না।
এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সংসদে নিয়ে আসাটাই দেখিয়ে দেয় যে, বাজপেয়ী বিরোধী দলগুলির মতামতকেও গুরুত্ব দিতেন, বলেছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, আরও অন্যান্য নজির আছে যেখানে কেন্দ্রের বর্তমান সরকারের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ভূমিকা দেখিয়েছিলেন তিনি। অর্থাত, রাজনীতি বা আদর্শের দিক থেকে সংঘাত, বিরোধের ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু অন্য নেতা বা দলগুলির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এমন ছবি দেখা যেত, যা আজ দেখা যায় না। সেজন্যই তিনি এত ব্যাপক সংখ্যক মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। তাঁর যে মুখই থাকুক না কেন, সব দলের সঙ্গে তাঁর দারুণ সম্পর্ক ছিল।
বামেরা বাজপেয়ীকে আরএসএসের ‘মুখোশ’ বলত। তবে আজ তারা একমত, অনেক ব্যাপারেই নিজের দলের লাইনের সঙ্গে প্রকাশ্যেই দ্বিমত জানাতেন তিনি। ডি রাজা বলেছেন, বাজপেয়ীর বিশ্বস্ত সহযোগী লালকৃষ্ণ আডবাণী ও বেশিরভাগ বিজেপির নেতা বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়া সমর্থন করলেও স্পষ্ট তার নিন্দা করেছিলেন বাজপেয়ী। তিনি কখনও আজকের বিজেপির আগ্রাসী রাজনীতি করেননি বলে অভিমত জানিয়েছেন দুই বাম নেতা।