নয়াদিল্লি: বিশাখাপত্তনমের একটি রাসায়নিক কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে ইতিমধ্যেই ১ শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। ঘটনার জেরে আশেপাশের এলাকার সহস্রাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ২০০ জনকে বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বহু মানুষ হাসপাতালের পথে। তাঁদের প্রত্যেকেরই অসম্ভব চোখ জ্বালা ও হাঁপানি কষ্ট হচ্ছে। মানবশরীরের পক্ষে বিষাক্ত এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বহু মানুষ। সারা শরীর জুড়ে দেখা দিয়েছে গুটি।


জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তৎপরতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

বিশাখাপত্তনমের দক্ষিণ শহরতলির কাছে গোপালপত্তনম এলাকায় একটি রাসায়নিক কারখানা থেকেই সটাইরিন নামের ওই গ্যাস লিক হয়। এলজি পলিমার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, এই রাসায়নিক কারখানা থেকে লিক হওয়া গ্যাস মানব শরীরের পক্ষে বিষাক্ত। যার জেরে তৎক্ষনাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে কারখানার কর্মী ও এলাকার লোকজন। শুধু আশেপাশের নয় কারখানাকে কেন্দ্র করে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব।

যদিও কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, গ্যাস লিকের পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে এখন।

গ্যাস লিকের জেরে বন্দর শহরের যে ছবি উঠে এসেছে, তা এক কথায় ভয়ঙ্কর। গ্যাস শরীরে ঢুকতে রাস্তাতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায় শিশুরা। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় মহিলাদেরও। মোটরবাইক আরোহীদের পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে রাস্তায়।

স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় ১০০০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এঁদের অক্সিজেন ও স্বাস্থ্যকর বাতাস প্রয়োজন। এই কারখানার আশপাশ জুড়ে বহু মানুষের বাস। তাঁদের শরীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।

এই ঘটনা আবারও একবার ১৯৮৪র ভোপালের গ্যাস লিকের ঘটনার স্মৃতি উষ্কে দিল। প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল সেই ঘটনায়। আজও সেই ঘটনার কুপ্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ভোপাল। নানারকম শারীরিক অসুস্থতায় আজও ভোগে ভোপালের মানুষ। শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, কিডনির সমস্যা, হরমোনের সমস্যা, এমনকী নানাবিধ ক্যান্সারেরও কারণ এই গ্যাস লিক।
এক অজানা আশঙ্কায় ভুগছে বিশাখাপত্তনমও।