কলকাতা: এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা, আতঙ্ক, উদ্বেগের বিষয় হল নোভেল করোনা ভাইরাস। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। লকডাউন সত্ত্বেও যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়ছে, তাতে মানুষ আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। এরই মধ্যে আবার লকডাউন উপেক্ষা করে অনেকেই রাস্তায় নেমে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেকে্ই কম-বেশি আশঙ্কার দোলাচলে।


করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কীভাবে ছড়ায়? কীভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়? লকডাউন কেন জরুরি? বাড়িতে বসে থাকলেই কি সংক্রমণ এড়ানো যাবে? কাদের শরীরে সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি? এই ধরনের নানা প্রশ্ন অনেকের মনেই আসছে। কিন্তু, সহজে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন আইআইটি খড়গপুরের পড়ুয়ারা। তাঁরা বানিয়েছেন একটি ‘ভয়েসবট’। মোবাইল ফোনে অপেরা মিনি ব্রাউজারের মাধ্যমে www.denguebot.in ওয়েবসাইটটি খুলে প্রশ্ন করলেই সঙ্গে সঙ্গে জবাব পাওয়া যাবে। প্রশ্ন লিখতেও হবে না, মুখে বললেই হবে। কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে এবং লিখিত আকারে জবাব পাওয়া যাবে। বাংলায় প্রশ্ন করা যাবে, জবাবও পাওয়া যাবে বাংলায়। একইসঙ্গে ইংরাজিতেও জবাব পাওয়া যাবে। এই ওয়েবসাইট নির্মাতাদের দাবি, বিশ্বে এই প্রথম করোনা ভাইরাস সচেতনতায় ভয়েসবট তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আইআইটি খড়গপুরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্য়ান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র সৌভ মজুমদার জানিয়েছেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে আমরা প্রথমে ডেঙ্গু সচেতনতার জন্য এই ভয়েসবট তৈরি করি। আমাদের চার-পাঁচজনের একটা দল ছিল। আমাদের সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক অমিতাভ ভট্টাচার্য। তিনি আমাদের সাহায্য করেন। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর আমরা সেই ভয়েসবটটাকেই উন্নত করেছি। ডেঙ্গু নিয়ে প্রশ্নের উত্তর বাংলায় পাওয়া যায়। কারণ, ডেঙ্গু মূলত বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস যেহেতু সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, তাই এটির উত্তর ইংরাজিতে পাওয়া যাবে। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রককে আমাদের এই ভয়েসবটের বিষয়ে জানিয়েছি। এই ভয়েসবটের সঙ্গেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট যুক্ত রয়েছে। ফলে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা, চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এখান থেকেই পাওয়া যাবে। আমাদের এই ভয়েসবট ব্যবহার করার জন্য আলাদা করে টাকাও দিতে হবে না। ফলে আশা করি সবার উপকার হবে।’