নয়াদিল্লি: ভারতের ইতিহাস চমকপ্রদ। সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন, যুদ্ধবিগ্রহের ঘটনা জুড়ে রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। এমন অনেক যুদ্ধ হয়েছে, যেগুলির গৌরবগাঁথা এখনও স্মরণীয়। আবার এমনও যুদ্ধ হয়েছে, যার কারণ খুবই অদ্ভুত। এমনই একটি লড়াই হয়েছিল আজ থেকে ৩৭৫ বছর আগে। একটি মাত্র তরমুজকে নিয়েই বেঁধে গিয়েছিল রাজস্থানের দুই রাজ্যের সৈনিকদের মধ্যে হানাহানি। প্রাণ হারিয়েছিল বেশ কয়েক হাজার। আর ওই যুদ্ধ ‘মতিরে কি রাঢ়’ হিসেবে পরিচিত। রাজস্থানের কোনও কোনও অংশে তরমুজকে বলা হয় 'মতিরে' আর 'রাঢ়' মানে লড়াই। পৃথিবীতে সম্ভবত এই একটা লড়াইয়ে হয়েছিল একটি মাত্র ফলের জন্য।

১৬৪৪ সালে এই যুদ্ধ হয়েছিল। এই যুদ্ধ নিয়ে যে কাহিনি প্রচলিত রয়েছে, তা হল, বিকানের রাজ্যের সিলভা ও নাগৌর রাজ্যের জাখানি গ্রামে ছিল একে অপরের সংলগ্ন। বিকানের রাজ্যের সীমানায় একটি তরমুজ গাছ বড় হয়ে উঠেছিল। প্রকৃতির খেয়ালে ওই গাছের একটি ফল ফলেছিল সীমানা টপকে নাগৌর রাজ্যে। রাজন্য শাসিত বিকানের রাজ্যের লোকজন দাবি করে, গাছ যেহেতু তাদের সীমানায়, তাই ফলও তাদের। কিন্তু রাজন্য শাসিত নাগৌরের লোকজন দাবি করে, ফলটি যখন সীমানা টপকে তাদের এলাকায় রয়েছে, তাহলে তা প্রাপ্য তাদেরই। ফলের অধিকার নিয়ে দুই রাজ্যের তীব্র বচসা শুরু হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই বচসাই পর্যবসিত হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে।

বলা হয়ে থাকে যে, আজব এই যুদ্ধে বিকানেরের সেনার নেতৃত্বে ছিলেন রামচন্দ্র মুখিয়া আর নাগৌরের বাহিনীর নেতৃত্বে সিংভি সুখমল। আর সবচেয়ে বড় কথা, দুই রাজ্যের রাজারা এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। সবকিছু জানার পর তাঁরা মুঘল সাম্রাজ্যের হস্তক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু মুঘল দরবারে বিষয়টি পৌঁছনোর আগেই যুদ্ধ বেঁধে যায়। নাগৌর এই যুদ্ধে পরাস্ত হয় বলে জানা যায়। আর যুদ্ধে দুই পক্ষের কয়েক হাজার সৈন্যের মৃত্যু হয়েছিল।