কলকাতা:  নৃশংসতা রুখতে কড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতিতে পাস হয়ে গেল দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং বিল – ২০১৯।শুক্রবার বিলটি পেশ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজস্থান এই বিল এনেও পাস করাতে পারেনি। কারণ তারা রাজ্যপালের সম্মতি নেয়নি। আমরা রাজ্যপালের অনুমতি নিয়েই বিল পেশ করেছি। যখন দেশ অন্যায়, অত্যাচার, সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যায় তখন বাংলা পথ দেখায়। আজ দেশজুড়ে একটাই কথা লিঞ্চিং, লিঞ্চিং, লিঞ্চিং। লিঞ্চিং নিয়ে যা হচ্ছে, তা নিয়ে একটা অভিধান হয়ে যাবে। এর জন্য সমাজে সচেতনতার দরকার আছে। কেন একদল মানুষ, অন্য একজন মানুষকে খুন করবে? এই জিনিস বরদাস্ত করা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে বলেছেন। খুব কম বলেছেন। কেন্দ্র এখনও এই নিয়ে কোনও বিল নিয়ে আসেনি। দুর্যোধন, দুঃশাসনের রাজত্ব নয়। ভারতের ঐতিহ্য মেনেই ভারত চলবে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং বিলে বলা হয়েছে, গণপ্রহারে কারও মৃত্যু হলে বা খুনের উদ্দেশে মারা হলে, দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যদণ্ড পর্যন্ত সাজার সংস্থান রয়েছে বিলে। সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে।

গণপ্রহারে কেউ আহত হলে দোষীদের ৩ বছর পর্যন্ত জেল বা ৫ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।অথবা একসঙ্গে দুটোই কার্যকর হবে।
গণপিটুনিতে কারও আঘাত গুরুতর হলে দোষীদের ১০ বছর কারাদণ্ড থেকে শুরু করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সংস্থান থাকছে। অথবা, ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। এক্ষেত্রেও একসঙ্গে দুটো শাস্তিরও বিধান থাকছে।
বিলের বিষয়বস্তু নিয়ে কোনও দলই বিরোধিতা করেনি। ধ্বনিভোটে বিধানসভায় পাস হয়ে যায় গণপ্রহার বিরোধী বিল।
বাম ও কংগ্রেসের দাবি, অপরাধী যাতে কোনওভাবেই ছাড়া না পায়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।
বিজেপির বক্তব্য, কোনওভাবেই এই বিলকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা চলবে না।
তবে গণপিটুনি রোধে সরকার যে দিন বিধানসভায় কড়া বিল পাস করাল, সেদিনই দুই জেলায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটল।দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে ছাত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয়রা। জলপাইগুড়িতেও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে ব্যাপক মারধর করা হয়।