নয়াদিল্লি: ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত নীতি বদল নিয়ে যখন সারা বিশ্বে বিতর্ক চলছে, তখন হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে তারা তৈরি। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান উইল ক্যাথকার্ট জানিয়েছেন, ‘আমরা জানি, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। সেটা সারা বিশ্বের পক্ষেই ভাল। কীভাবে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন, সে বিষয়ে মানুষের কাছে একাধিক মাধ্যম থাকা উচিত। আমরা আশাবাদী, এই প্রতিযোগিতায় কেউ আমাদের টেক্কা দিতে পারবে না।’


হোয়াটসঅ্যাপের নীতি বদল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সারা বিশ্বে আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে হোয়াটটসঅ্যাপের নতুন নীতি। অনেকেরই আশঙ্কা, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের গোপনীয় তথ্য ফেসবুকের কাছে ফাঁস হয়ে যাবে। এই আশঙ্কা থেকেই অনেকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছেন। অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপের বদলে টেলিগ্রাম, সিগন্যালের মতো অ্যাপ ব্যবহার শুরু করেছেন। তাঁরা অবশ্য চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে মানতে নারাজ হোয়াটসঅ্যাপ প্রধান। তাঁর দাবি, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনও অ্যাপের ব্যবহার অনেক বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করি না। মানুষ এখনও হোয়াটসঅ্যাপের উপরেই ভরসা রেখেছেন। তাঁরা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সেই কারণে আমরা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখা নিয়ে প্রতিযোগিতা সবসময় ভাল। এর ফলে ভবিষ্যতে অ্যাপগুলি আরও সুরক্ষিত হবে এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় থাকবে। আমরা যে কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে তৈরি। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা দায়বদ্ধ। এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে আমরা তৈরি।’

তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রে খবর, হোয়াটসঅ্যাপের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত নীতি বদল হওয়ার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হোয়াটসঅ্যাপ প্রধানের এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। গত কয়েক বছরে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। উস্কানিমূলক বার্তা ছড়ানো রোখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ।

কয়েকদিন আগেই ট্যুইট করে হোয়াটসঅ্যাপ প্রধান জানিয়েছেন, ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংক্রান্ত নীতিতে আমরা যে বদল আনার কথা ঘোষণা করেছি, সে বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে অনেক আলোচনা হচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমি কিছু কথা জানাতে চাই। সারা বিশ্বে ২০০ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত আলাপচারিতা গোপনীয় রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধ হোয়াটসঅ্যাপ। আপনারা প্রিয়জনের সঙ্গে যে বার্তার আদানপ্রদান করছেন বা হোয়াটসঅ্যাপ কল করে যে কথাবার্তা চালাচ্ছেন, তা আপনাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এ বিষয়ে আমাদের নীতিতে কোনও বদল আসছে না। ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’-এর ফলে আমরা আপনাদের ব্যক্তিগত মেসেজ বা কল দেখতে ও জানতে পারি না। ফেসবুকও এ বিষয়ে কোনও তথ্য পাচ্ছে না। আমরা সারা বিশ্বে এই প্রযুক্তি বজায় রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধ।’