নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে করোনা দাপট অব্যাহত। দেশে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা পৌনে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৭ হাজার পার করেছে। মঙ্গলবারের হিসেব অনুসারে ১০ হাজার ছুঁইছুই দৈনিক সংক্রমণ। করোনার উৎসস্থল উহানকেও পিছনে ফেলেছে মুম্বই। এই পরিস্থিতিতে প্রতিষেধক বেরনোর দিকে তাকিয়ে সকলে।


করোনার প্রতিষেধক নিয়ে পরীক্ষায় সবথেকে বেশি এগিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল । তারা ChAdOx1 nCoV-19 ভ্যাকসিন নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার স্তরে আছে। এই গবেষণায় যৌথ ভাবে কাজ করছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca).

কিন্তু এত সময় লাগছে কেন ভ্যাকসিন তৈরিতে?

এই প্রশ্নটাই এখন সকলের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার কথা।
এই প্রতিষেধক প্রথমে পরীক্ষিত হল ইঁদুর ও বাঁদরের উপর, তারপর মানুষের শরীরে। তাই প্রতিটি স্তর পেরোতে সময় তো লাগেই। মানুষের শরীরেও তিন ধাপে পরীক্ষা করা হয় এই ভ্যাকসিন। প্রতিটি পর্যায়ে সংখ্যা বাড়ানো হয়। প্রথমে যুবকদের শরীরে, পরে বৃদ্ধদের উপর প্রতিষেধকের প্রয়োগ করে দেখা হয়। তৃতীয় ধাপে, অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের উপর ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরেই প্রয়োগ করা হয় ভ্যাকসিনটি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা আপাতত ২য় ও ৩য় পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জানানো হয়েছে, ইউকে-তে ইতিমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির উপর পরীক্ষামূলকভাবে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ হয়েছে। এবার আরও বেশি সংখ্যক মানুষের উপর পরীক্ষা চালাবে তারা। পরীক্ষা চালানো হবে ব্রাজিলেও।
অন্যদিকে মার্কিন সংস্থা মডার্নাও (Moderna ) ভ্যাকসিন পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে।
চিনা গবেষণা সংস্থা ক্যানসিনো বায়োলজিকস (CanSino Biologics)-ও ভ্যাকসিন গবেষণার ২য় পর্যায়ে আছে।

ট্রায়ালের পরে কী?

তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় অনেক বেশি মানুষের উপর প্রয়োগ করা হয় ভ্যাকসিনটি। এতে সময় অনেকটা বেশি লাগে।  অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বলা হয়েছে,  যাদের উপর করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হবে, তাদের কয়েকজন যেন সংক্রমিত হন। নইলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা বোঝা যাবে না। যদি সংক্রমণের মাত্রা বেশি থাকে, তাহলে ২ সপ্তাহের মধ্যেই যথেষ্ট তথ্য সংগৃহীত হবে। কিন্তু সংক্রমণের মাত্রা কমে গেলে ভ্যাকসিনের ফল বুঝতে ৬ মাসও সময় লেগে যেতে পারে।
এখন সারা বিশ্বে ৩০টিরও বেশি গবেষক দল করোনার ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে। যদি গবেষণার ফল ইতিবাচক হয়, তাহলে মার্কিন সংস্থা পিফাইজার অক্টোবর থেকে ভ্যাকসিন প্রস্তুত করবে।