তবে পাল্টা মুখ খুলতে দেরি করেনি বিজেপিও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ প্রশ্ন তুলেছেন, চিনের এমন মনোভাবে গোটা দেশ যখন বিচলিত, ব্যথিত, তখন রাহুল গাঁধীর কেন এমন ‘খুশি খুশি ভাব’! কংগ্রেস সভাপতির এধরনের কথাবার্তায় তিনি ‘মাসুদ আজহারের খুব কাছাকাছি’ বলে মনে হয়।
দূরত্ব ঘোচাতে প্রধানমন্ত্রীর চিনের দিকে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে রবিশঙ্কর বলেন, ভারত চিনের সঙ্গে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করলেও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় কিন্তু অনমনীয়ই রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, মাসুদকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী তালিকায় ফেলার প্রস্তাবে এবারই প্রথম রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তিন স্থায়ী সদস্য দেশ সমর্থন করেছে, অন্য সদস্য দেশগুলিও স্পনসর করেছে। এটা ভারতের বিরাট ‘কূটনৈতিক জয়’, কেননা দেখা গেল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ের পাশে রয়েছে গোটা দুনিয়া।
কটাক্ষের সুরে রবিশঙ্কর বলেন, রাহুলের ট্যুইট পাকিস্তানে খবরের হেডলাইন হবে, জইশের দপ্তরেও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বিলি করা হবে, সম্ভবত উনিও তাতে খুশি হবেন। এও বলেন, রাহুল চিনা মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা বলেছেন, ভারতে চিনা দূতাবাস তাঁকে গত বছর মানসসরোবর যাত্রার সময় শুভ বিদায় জানাতে চেয়েছিল বলেও জানিয়েছেন। চিনের সঙ্গে যখন এতই ভাল সম্পর্ক, তাহলে আপনার সেই সুযোগ কাজ লাগিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে পেশ হওয়া প্রস্তাব সমর্থনে তাদের রাজি করানো উচিত ছিল।
কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের লেখা বই ‘নেহরু, দি ইনভেনশন অব ইন্ডিয়া’ উদ্ধৃত করেও রবিশঙ্কর বলেন, চিনের রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় সক্রিয় হয়েছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। ভারত মোদির নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নির্নায়ক লড়াই চালিয়ে যাবে বলে দাবি করে তিনি বলেন, চিনের আচরণে কংগ্রেস, রাহুল গাঁধী খুশি হলেও বিজেপি দুঃখিত।
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও নিশানা করেন নেহরুকে। ১৯৫৫-র ২ আগস্ট দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের লেখা তাঁর লেখা চিঠির উল্লেখ করে বলেন, উনিই আসল অপরাধী, যিনি নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদের ইস্যুতে ভারতকে উপেক্ষা করে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন চিনকে! কাশ্মীর ও চিন, দুটি ক্ষেত্রেই আসল ভুলটা করেছিলেন সেই একজনই। জেটলি ট্যুইট করেন, পন্ডিত নেহরুর সেই কুখ্যাত চিঠিতে রয়েছে, ঘরোয়া ভাবে আমেরিকা প্রস্তাব দিয়েছে, চিনকে নিরাপত্তা পরিষদে নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জে রাখতে হবে, ভারতের নিরাপত্তা পরিষদে তার স্থান নেওয়া উচিত। কিন্তু আমরা এটা মানতে পারি না কেননা এর অর্থ চিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া। চিনের মতো একটি মহান দেশের নিরাপত্তা পরিষদে না থাকাটা এক বিরাট অন্যায়। রাহুলকে খোঁচা দিয়ে জেটলির প্রশ্ন, কংগ্রেস সভাপতি কি তবে বলবেন, আসল পাপী কে।