কলকাতা: জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র বিরোধিতায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় একযোগে প্রস্তাব গ্রহণ করল তৃণমূল ও বাম-কংগ্রেস। এনআরসি-র সমর্থনে ওয়াকআউট বিজেপির। সম্প্রতি বিজেপি শাসিত অসমে প্রকাশিত হয়েছে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা। বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। এ রাজ্যেও ক্ষমতায় এলেই নিত্যদিন এনআরসি চালুর হুঁশিয়ারি দিচ্ছে বিজেপি। যদিও এর বিরোধিতায় একসুর শোনা গিয়েছে শাসক তৃণমূল ও বিরোধী বাম-কংগ্রেসের গলায়। এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার বিধানসভায় কোনওভাবেই পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি চালু করতে দেওয়া হবে না বলে প্রস্তাব গ্রহণ করল সরকার। সমর্থন জানায় বাম ও কংগ্রেস। বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, এনআরসির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মীয় মেরুকরণ। এ প্রসঙ্গে একসঙ্গে আন্দোলনের নামার কথা বলেছে দু’দলই। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য পথে নেমে ধর্মীয় রাজনীতি রোখার কথা বলেন। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাস্তায় নেমেই আরা প্রতিবাদ করছি। সবাই নামলে ভাল।
বিজেপি পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা অবশ্য জানিয়ে দেন, এরাজ্যে এনআরসি চালু হবেই। এই মুখ্যমন্ত্রীই তো একসময় অনুপ্রবেশ নিয়ে লোকসভায় সরব ছিলেন। আজ উল্টো কথা বলে দ্বিচারিতা করছেন বলেও মমতাকে আক্রমণ করেন তিনি।
এনআরসি ইস্যুতে এদিন বিধানসভায় কেন্দ্র তথা বিজেপির বিরুদ্ধে সরব মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, এ রাজ্যে আমরা কিছুতেই এনআরসি চালু করতে দেব না। আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। রাস্তায় নেমেই প্রতিবাদ করতে হবে। না হলে, এরা সব ধ্বংস করে দেবে। বাংলাই এদের টার্গেট। যেভাবে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে, তা কিছুতেই মেনে নেব না।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বহিন্দু পরিষদ আবার মমতার বিরুদ্ধেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে। সংগঠনের দক্ষিণবঙ্গের প্রধান শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, আমরা চাই সিটিজেনস বিল পাশ হোক। তারপর এনআরসি চালু হোক রাজ্যে। রাজ্য সরকার এর বিরোধিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রীই সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক সামনে রেখে রাজনীতি করছেন।

২০২১-এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সামনের বছর রয়েছে শতাধিক পুরসভার ভোট। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, দিন যত এগবে, এনআরসি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর ততই বাড়বে।