নয়াদিল্লি: সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে নরেন্দ্র মোদিকে হুঙ্কার রাহুল গাঁধীর। সদ্য তিন রাজ্যে বিজেপিকে হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, সরকার গড়তে পারলে কৃষিঋণ মকুব করা হবে। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই মধ্যপ্রদেশের চাষিদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন কমলনাথ। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারও। সেই প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, ১০ দিনে কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। দুই রাজ্যে ৬ ঘন্টায় তা করে দেখিয়েছি। সেইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, দেশের সব কৃষকের ঋণ মাফ না করা পর্যন্ত ঘুমোতে দেব না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাহুল অভিযোগ করেন, রিলায়েন্স শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অনিল অম্বানি সহ ১৫ জন শীর্ষ শিল্পপতির নেওয়া ঋণ আদায়ের ব্যাপারে সরকার চোখ বুজে রয়েছে, কিন্তু গত ৪ বছরে কৃষকের দুর্দশা ঘোচাতেও কোনও চেষ্টাই করেনি। এটা প্রিয়ভাজনদের সুবিধা করে দেওয়ার উদাহরণ বলে দাবি করেন তিনি। মোদি, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বন্ধুদের দেওয়া ঋণও মকুব করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি পরিসংখ্যান দেন, অনিল অম্বানি সহ ১৫ জনের সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মাফ করে দেওয়া হয়েছে। বলেন, একদিকে গরিব মানুষ, ছোট দোকানদার, আরেকদিকে শিল্পপতিদের গোষ্ঠী। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলি তাদের পাশে থাকবে বলেও দেশের মানুষকে আশ্বাস দেন রাহুল।
নোট বাতিল নিয়েও মোদিকে আক্রমণ করেন রাহুল। বিমুদ্রাকরণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি বলে দাবি করে রাহুল বলেন, এই সরকার সাধারণ মানুষ, দোকানদার, কৃষকের টাকা চুরি করেছে। নোট বাতিল আর ঋণ মকুবের মধ্যে যে কোনও একটা বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল মোদির সামনে, আর তিনি নোট বাতিলকেই বেছে নিলেন, নিজের শিল্পপতি বন্ধুদের টাকা বিলিয়ে দিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাফাল ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া হলফনামায় ‘ভুল’ নিয়ে সরকারের বক্তব্য সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাহুল কটাক্ষ করেন, এখন এরকম আরও অনেক টাইপো বেরবে। প্রসঙ্গত, মোদি সরকার তাদের হলফনামায় দাবি করেছে, রাফালের দাম নির্ধারণের বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন সিএজি, যাঁর রিপোর্ট নিয়ে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। রাহুল জানিয়ে দেন, আমরা রাফাল ইস্যুতে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনে বাধ্য করব সরকারকে। কেন সরকার, বিজেপি সংসদে বিতর্ক থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
যদিও ১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গা মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে দোষী ঘোষিত হয়ে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। সজ্জনকে ক্ষমা চাইতে হবে, বিজেপির এই দাবি নিয়ে প্রশ্নে নিরুত্তর ছিলেন রাহুল।