নয়াদিল্লি: আজ ৩ মার্চ দিনটি বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বন্যপ্রাণ দিবস হিসেবে। গাছপালা এবং পশুপাখিদের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে আজকের এই দিনে।


আজ বন্যপ্রাণ ও গাছ বাঁচানোর উপর জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ট্যুইট করে উপরাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবসে আমাদের সবাইকে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের চেষ্টা শুরু করতে হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।’



প্রধানমন্ত্রীর ট্যুইট, ‘সিংহ, বাঘ হোক বা চিতাবাঘ, ভারতে বিভিন্ন পশুর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের জঙ্গল সংরক্ষণ এবং বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান নিরাপদ করে তোলার জন্য আমাদের সবরকম চেষ্টা করতে হবে।’



গত কয়েক দশকে বিভিন্ন কারণে বিশ্বজুড়ে বনভূমির সংখ্যা কমে গিয়েছে এবং অনেক বন্যপ্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই আজকের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য সব প্রাণীকেই বাঁচিয়ে রাখতে হবে।


রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস একটি বার্ষিক অনুষ্ঠান হলেও, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে প্রতিদিন আমাদের সচেতন থাকা উচিত।’


১৯৭৩ সালের ৩ মার্চ বিপন্ন পশু-পাখি ও গাছ বাঁচানোর জন্য একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তারপরেও অবশ্য সচেতনতার অভাব রয়েই গিয়েছে। এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পশু-পাখিদের উপর অত্যাচার হচ্ছে, নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। গাছ কাটাও সমানভাবে চলছে। এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের ৬৮-তম সাধারণ অধিবেশনে ঘোষণা করা হয়, প্রতি বছর ৩ মার্চ দিনটি বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস হিসেবে পালন করা হবে। তাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়।


বিপন্ন বন্যপ্রাণ নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করার যে আন্তর্জাতিক চুক্তি রয়েছে, ভারতও তাতে সামিল হয়েছে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই আইনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্যপ্রাণ শিকার হচ্ছে কি না এবং সেগুলি নিয়ে ব্যবসা চলছে কি না, তার উপর নজর রাখে এই চুক্তিতে সম্মত হওয়া দেশগুলি। রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকেও নজরদারি চালানো হয়।


রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে এবারের বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবসের থিম হিসেবে ‘জঙ্গল ও জীবিকা: মানুষ ও গাছ বাঁচানো’-কে তুলে ধরা হয়েছে। এই থিমের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, মানুষের জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে জঙ্গল ও বাস্তুতন্ত্র কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও জায়গার আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে জঙ্গলের যোগের বিষয়টির উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। সম্পদ ঠিকমতো কাজে লাগিয়ে দারিদ্র্য দূর করাই রাষ্ট্রপুঞ্জের লক্ষ্য। বিশ্বজুড়ে ২০ থেকে ৩৫ কোটি মানুষ জঙ্গল বা জঙ্গলের কাছাকাছি কোনও জায়গা বাস করেন। জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাওয়া, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন কারণে জঙ্গলের উপর যাঁদের জীবন ও জীবিকা নির্ভরশীল, তাঁরা বিপন্ন। সেই কারণেই এবার জঙ্গলের পাশাপাশি জঙ্গলের মানুষ বাঁচানোর উপরেও জোর দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।