নয়াদিল্লি: বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য ছিলই। কিন্তু বিজেপি বিরোধী INDIA শিবিরে এবার বড় ফাটল। বিরোধী জোট থেকে কংগ্রেসকে বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করল আম আদমি পার্টি। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেসের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করেছে, তাকে 'বিভ্রান্তিমূলক' বলে উল্লেখ করেছে কংগ্রেস। সেই আবহেই INDIA জোট থেকে কংগ্রেসকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলতে শুরু করেছে আম আদমি পার্টি। জোটের অন্য শরিকদের সঙ্গে এ নিয়ে তারা আলোচনা করতে আগ্রহী বলে খবর। (INDIA Bloc)


জাতীয় স্তরে জোটশরিক হলেও, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছে। বুধবার কংগ্রেসের তরফে ১২ পয়েন্টের 'মওকা মওকা, হর বার ধোকা' নামের একটি 'শ্বেতপত্র' প্রকাশ করা হয়। বিজেপি এবং আম আদমি পার্টি  কী কী প্রতিশ্রুতি পালন করেনি, দূষণ, নাগরিক পরিষেবা, আইনশৃঙ্খলায় কী কী গাফিলতি রয়েছে, তার তালিকা তুলে ধরেন কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন। দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও আম আদমি পার্টিকে নিশানা করেন তিনি। কেজরিওয়ালকে তিনি 'ফর্জিওয়াল' বলেও কটাক্ষ করেন। লোকসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির সঙ্গে দিল্লিতে জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলেও মন্তব্য করেন অজয়। (Congress vs AAP Conflict)


আম আদমি পার্টি এবং কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে অজয়কে বলতে শোনা যায়, "দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে একটি শব্দে ব্যাখ্যা করতে হলে বলব, ফর্জিওয়ালই সঠিক শব্দ। গোটা দেশে জালিয়াতির রাজা যদি কেউ হন, তিনি হলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাই কেজরিওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও শ্বেতপত্র এনেছি আমরা।"


এর পরই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে আম আদমি পার্টি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী এবং রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন। দিল্লিতে কংগ্রেস আসলে বিজেপি-কে সুবিধে করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। আম আদমি পার্টি বরাবর জোটধর্ম পালন করলেও, কংগ্রেস তা করছে না বলে দাবি করেন অতিশী এবং সঞ্জয়। এ প্রসঙ্গে হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গও টানা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেস যদি অজয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করে, সেক্ষেত্রে INDIA শিবির থেকে কংগ্রেসকে বাদ দেওয়ার আর্জি জানানো হবে বলে ঘোষণা করেন সঞ্জয়। 


কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী INDIA শিবিরে শামিল রয়েছে কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি। আগেও একাধিক হার দুই পক্ষের মধ্যে মতানৈক্য দেখা গিয়েছে। সর্বভারতীয় স্তরে জোটশরিক হলেও, দিল্লি এবং পঞ্জাবে পরস্পরের প্রতিপক্ষও তারা। দিল্লিতে কংগ্রেসের ১৫ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটানোর নেপথ্যেও ছিলেন কেজরিওয়ালই। তার পরও বিরোধী জোটে শরিক হিসেবে শামিল হয় দুই দল। কিন্তু দুই দলের সংঘাত এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।